ডেঙ্গু প্রতিরোধে একগুচ্ছ নির্দেশনা স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর, বছরব্যাপী কর্মসূচি

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে বছরব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে আমদানিকৃত কীটনাশকের গুণগতমান পরীক্ষা নিশ্চিত করাসহ সংশ্লিষ্টদের একগুচ্ছ নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কমিটির চলতি বছরের প্রথম সভায় এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস, প্রজননস্থল নষ্ট, ওষুধের গুণগতমান পরীক্ষা ও সচেতনতা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব ও নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে মন্ত্রী ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজননস্থলগুলো চিহ্নিত করে লার্ভা ধ্বংসের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় তিনি বসত-বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা যাতে জন্মাতে না পারে সেজন্য ফুলের টব, টায়ার, ফ্রিজের নিচে কিংবা বাসার ভেতর জমা পানি প্রতি তিন দিনে একবার পরিষ্কার করার আহ্বান জানান।
এছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, হাসপাতাল ও মেডিকেল বর্জ্য এবং বিভিন্ন থানায় জব্দকৃত যানবাহনে যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেজন্য বছরের প্রথম থেকেই সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে সচেতন হওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পাশাপাশি ব্যাংক ও আবাসিক এলাকাগুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিতে আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরা সচেতন হলে ডেঙ্গু ও এডিস মশা প্রতিরোধ কার্যকর করা সম্ভব।
সভায় এ বছর সারাদেশ ব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে কার্যকর ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেন তাজুল ইসলাম।
মন্ত্রী এ সময় সারাদেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের অধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধিতে সক্রিয় হওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে বলেন।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, গ্রামের অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ায় গ্রামেও নগরায়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে গ্রামেও স্বচ্ছ জমাটবদ্ধ পানি থেকে এডিস মশার লার্ভা উৎপন্ন হতে পারে। যেহেতু গতবছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেছে তাই আশঙ্কার কথা হচ্ছে এবছর তা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যদি আমরা এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করতে না পারি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের আমদানিকৃত কীটনাশকের গুণগতমান পরীক্ষা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, গতবার মশার কীটনাশক স্প্রে নিয়ে কিছু বিতর্ক তৈরি হওয়ায় এ বছর পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যাতে ওষুধ কার্যকর হয়।
মন্ত্রী এ সময় এ বছরের ডেঙ্গুর গবেষণা ও ডাটা সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় ফলাফল সংরক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় যাতে ঠিক থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখার জন্য বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. হেমায়েত আকবর টিপু জানান, মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডেঙ্গু সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্য ও এডিসসহ নানা ধরনের মশার বিষয়ে শিক্ষা কারিকুলামে যোগ করা যায় কিনা সে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিবেচনা করতে বলেন।
(ঢাকাটাইমস/১৭জানুয়ারি/ইএস)

মন্তব্য করুন