ইসরায়েল-হামাস চুক্তি: গাজায় প্রবেশ করেছে ওষুধ ও ত্রাণের চালান

কাতার ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় গাজা উপত্যকায় আটক জিম্মিদের জন্য ওষুধ সরবরাহের বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি করেছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিনিময়ে গাজার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আরও বেশি ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দেবে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার সকালেই গাজায় মানবিক সাহায্য ও ওষুধ প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে কাতার।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ বলেছেন, ‘ঘোষিত চুক্তির বাস্তবায়নে হামাসের কাছে আটক জিম্মিসহ গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ওষুধ ও মানবিক সাহায্য গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেগুলো গ্রহণ করেছে।’
আল-আনসারি আরও বলেন, গাজায় পরিস্থিতি উন্নয়নে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে, রাজনৈতিক ও মানবিক স্তরে মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার।
এর আগে মঙ্গলবার কাতার এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দু’পক্ষের প্রতিনিধি। চুক্তিতে ওষুধের প্রবেশ এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তার একটি চালান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বিশেষ করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়, বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, ‘ওষুধগুলো গাজায় কাতারের প্রতিনিধিরা পাঠিয়ে দেবেন।’
এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৪৫ জন জিম্মির জন্য ওষুধগুলো পাঠানো হচ্ছে। নভেম্বরে ৮৩ জনের প্রাথমিকভাবে ওষুধের প্রয়োজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
ফরাসি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফিলিপ ল্যালিয়ট জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজার সীমান্ত শহর রাফাহ’র একটি হাসপাতালে ওষুধ পৌঁছানোর পর বুধবার আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি ওষুধ গ্রহণ করবে এবং তারা অবিলম্বে জিম্মিদের কাছে পৌঁছে দেবে। এই ওষুধে জিম্মিদের তিন মাস চলবে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। তিন মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে হাসপাতালে আনা হয়েছে এমন নিহত ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
মাঝে এক সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতিতে ২৪ বিদেশিসহ মোট ১০৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ৭১ জন মহিলা এবং ১৬৯টি শিশু রয়েছে। হামাসের কাছে এখনো ১৩০ জন জিম্মি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এমআর)

মন্তব্য করুন