যেভাবে অপহরণ হন হিমেল, জানাল র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:০৪ | প্রকাশিত : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৮

অপহৃত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এসময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় চক্রের মূলহোতা মালেকসহ পাঁচজনকে।

র‍্যাব বলছে, গ্রেপ্তার মালেক হিমেলের মাকে বিদেশি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে ফোন করে প্রথমে দুই কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন এবং তার ছেলেকে পাশবিক কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও পাঠান। পরে পর্যায়ক্রমে ১ কোটি, ৫০ লাখ ও ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেন মালেক। মুক্তিপণের টাকা না পেলে হিমেলের হাত-পা কেটে ফেলা ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হিমেলের মা মুক্তিপণের টাকা দিতে সম্মত হলে তাকে ২৩ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আসতে বলে অপহরণকারীরা। পরে তিনি বিষয়টি র‍্যাবকে অবহিত করেন। র‍্যাবের একটি দল সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করতে গেলে তারা র‍্যাবের ওপর ছুরি দিয়ে হামলা চালায়। এতে একজন কর্মকর্তাসহ দুইজন র‍্যাব সদস্য আহত হন। এসময় মালেক ও ছামিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পাহাড়ি টিলা এলাকা থেকে হিমেলকে উদ্ধার এবং অপহরণ চক্রের সদস্য রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় অপহরণ চক্রের ২ জন সদস্য পালিয়ে যান। মালেকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তরা থেকে রাসেল ও বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, অপহরণ চক্রের মূলহোতা মালেক এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছামিদুল। গ্রেপ্তার ছামিদুল হিমেলের বাসায় ৪ বছর যাবত গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করায় তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। তাদের পারিবারিক আর্থিক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতেন ছামিদুল। গত ১৬ ডিসেম্বর মালেকের নেতৃত্বে উত্তরার একটি জায়গায় সমবেত হন অপহরণকারীরা। এসময় মালেক ও ছামিদুল হিমেলকে অপহরণ করে তার পরিবারের নিকট থেকে বিপুল অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনার বিষয়টি তাদের অন্যান্য সহযোগীদের জানান। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রেপ্তার ছামিদুল হিমেলকে শেরপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাটারি বিক্রয়ের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে হিমেলকে শেরপুরে যেতে আগ্রহী করেন। গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টায় ভুক্তভোগী শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করলে ছামিদুল বিষয়টি মালেককে জানান।

র‍্যাব আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী মালেক ও অন্যান্য সহযোগীরা ৩/৪টি মোটরসাইকেলে করে হিমেলের গাড়ি অনুসরণ করতে থাকেন। গাজীপুরের সালনা এলাকায় পৌঁছালে গ্রেপ্তারকৃতরা মোটরসাইকেল দিয়ে গাড়িটির পথরোধ করেন। সন্ধ্যার দিকে তারা ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকা ধোবাউড়ায় পৌঁছান। পরে রাসেল ও বিল্লাল তাদেরকে ধোবাউড়ায় পৌঁছে দিয়ে গাড়িটি গাজীপুরের বাসন এলাকায় এনে রাখেন। বিল্লাল ময়মনসিংহ চলে যায় আর রাসেল উত্তরাতে ভুক্তভোগীর মায়ের গতিবিধি অনুসরণ করতো বলে জানা যায়।

ধোবাউড়ায় তিনদিন থাকার পর মালেক, ছামিদুল ও অপহরণ চক্রের অন্যান্যরা হিমেলকে নিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে আসেন। রনি তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তাঘাট ভালভাবে চিনতেন। তারা হিমেলকে নিয়ে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় পরিবর্তন করে অবস্থান করতে থাকেন। এসময় তারা হিমেলকে পাশবিকভাবে নির্যাতন করেন এবং তার ভিডিও ধারণ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এলএম/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :