বিপিএল: টানা পঞ্চম হার মাশরাফীর সিলেটের

চলতি বিপিএলটা একদমই ভালো যাচ্ছে না গত আসরের রানারআপ সিলেট স্ট্রাইকার্সের। মাঠ বদল হলেও ভাগ্য বদল হয়নি মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্সের। হারের বৃত্তে বন্দী সিলেট নিজেদের পঞ্চম ম্যাচেও হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে। নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে তামিমের বরিশালের কাছে ৪৯ রানে হেরেছে তারা। আর সিলেটকে হারিয়ে আসরে দ্বিতীয় জয় তুলে নিলো বরিশাল।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বরিশালের দেয়া ১৮৭ রান তাড়ায় নেমে ১৭.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানে থেমেছে সিলেট। দলকে ৪৯ রানের বড় জয় এনে দেয়ার পথে দুর্দান্ত বোলিংয়ে একাই ৪ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ইমরান।
সিলেটের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও শামসুর রহমান। দেখেশুনেই খেরতে থাকেন তারা। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ঘটে ছন্দপতন। দলীয় ২৫ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। আউট হওয়ার আগে করেন ৭ বলে ৯ রান।
২৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন জাকির হাসান ও শামসুর রহমান। তবে এই জুটিতে বেশিধূর এগোতে দেননি মোহাম্মদ ইমরান। ইমরানের বলে মিড উইকেটে দুনিথ ভেল্লালাগের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান শামসুর রহমান। আউট হওয়ার আগে করেন ২৩ বলে ২৫ রান।
শামসুর রহমান ফিরে যাবার পরের ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাও। ৩ বলে মাত্র ২ রান করে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে থার্ড ম্যানে আকিফ জাভেদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৫২ রানেই ৩ উইকেট হারায় সিলেট।
৫২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে দলের হাল ধরেন জাকির হাসান ও বেনি হাওয়েল। এই জুটি থেকে আসে ৪২ বলে ৫৮ রান। এই জুটিতে ভর করে ১২ ওভার ৪ বলে দলীয় শতক পূর্ণ করে সিলেট। তবে দলীয় শতক তুলে নেওয়ার র নিজেদের জুটিকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তারা।
অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে থাকা জাকির হাসান মোহাম্মদ ইমরানের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। মাত্র ৪ রানের জন্য অর্ধশতক থেকে বঞ্চিত হন তিনি।
জাকির হাসানের পর সাজঘরে ফিরে যান বেনি হাওয়েলও। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে কাভারে প্রীতম কুমারের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান বেনি হাওয়েল। আউট হওয়ার আগে করেন ১৯ বলে ২৪ রান।
এই দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট। দ্রুত উইকেট হারাতে থাকা সিলেট শেষ পর্যন্ত থামে ১৩৭ রানেই। যার ফলে তামিমের ফরচুন বরিশাল তুলে নেয় ৪৯ রানের জয়। নবম উইকেট জুটিতে সামিত প্যাটেল ও রেজাউর রহমান রাজার ৬ বলে ২০ রান শুধু হারের ব্যবধানেই কমিয়েছে।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ফরচুন বরিশালের। স্কোরবোর্ডে ৩৩ রান তুলতেই দুই উইকেট হারায় তারা। ৮ বলে দুই রান করে নাঈম হাসানের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন তামিম ইকবাল। আর পাঁচ বলে এক রান করা প্রীতম কুমারকে ফিরিয়েছেন সিলেটের জিম্বাবুইয়ান রিক্রুট রিচার্ড এনগারাভা। আরেকপাশ দিয়ে অবশ্য রান তুলে যাচ্ছিলেন আহমেদ শেহজাদ।
পাকিস্তানের সাবেক এই ওপেনার হাফ সেঞ্চুরি তোলেন মাত্র ৩০ বলে। সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। অল্প সময়ের মাঝে দুজন মিলে ৫০ রানের জুটি গড়েন। এই জুটি ভাঙেন বেনি হাওয়েল। তার নিচু হওয়া ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ১৭ বলে তিনটি চারে ২০ রান করে ফিরেন সৌম্য। দলীয় ১০৮ রানে ফিরে যান শেহজাদও।
৪১ বলে নয়টি চার ও একটি ছক্কায় ৬৬ রান করা এই ব্যাটারকে কট এন্ড বোল্ড করে ফেরান হাওয়েল। দলীয় ১৩৪ রানে মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারায় বরিশাল। হাওয়েলকে মিড উইকেটে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নাঈম হাসানের তালুবন্দি হন মুশফিক। প্রথম চেষ্টায় অবশ্য ওভার বাউন্ডারি বাঁচান নাঈম, পরে বাউন্ডারিতে ফিরে এসে ক্যাচ ধরেন তিনি।
শেষে মাহমুদউলাহর ঝড়ো ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ পায় বরিশাল। মাত্র ২৩ বলে এ দিন হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান এই ফিনিশার। শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে সাতটি চার ও দুটি ছক্কায় ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সঙ্গী মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৬ বলে ১৫ রান করে।
(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন