বাগানে বরইয়ের বাম্পার ফলন, দেড় লাখ টাকা বিক্রির আশা শিক্ষক এনামুলের

বাণিজ্যিকভাবে বরই চাষে সাফল্য পেয়েছেন শিক্ষক এনামুল হক সুমন। এবার তার বাগানে বরইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকার বরই বিক্রির আশা করছেন তিনি।
সুমন নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউপির পূর্বরায় গ্রামের শিক্ষক হাজী আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি কেন্দুয়া দিগদাইর মাদরাসায় ২০১৩ সালে থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। ২০২১ সালে নিজের বাড়িতে দারুস সুন্নাহ কওমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষকতা করে ৪০ শতাংশ জমিতে তিনি ১০ হাজার টাকার ২৫০টি বরই গাছের চারা কিনে চাষ শুরু করেন।
কিন্তু বন্যার কারণে ৫০টি গাছ নষ্ট হয়ে যায়। বাগান তৈরি থেকে বরই উৎপাদনে ২ বছরে তার খরচ হয়েছে ২০- ২৫ হাজার টাকা। প্রথম বছরেই প্রতিটি গাছে ৫ থেকে ৭ কেজি বরই ধরে এবং ৪০ হাজার টাকার বরই তিনি প্রথম বছরেই বিক্রি করেন। এ বছর তার প্রতিটি গাছে ৮ থেকে ১০ কেজি বরই এসেছে।
সরেজমিন সুমনের বরই বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাটির সামান্য ওপর থেকেই বল সুন্দরী ও কাশ্মীরী আপেল কুল গাছের ডালপালা চারদিক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি ডালে প্রচুর পরিমাণে বরই ধরেছে, প্রতিটি ডাল মাটিতে নুয়ে পড়ছে। যেটি দেখতে সুন্দর আবার খেতেও খুব মিষ্টি এবং সুস্বাদু। পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা তার বাগানে এসে বরই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতি কেজি বরই ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন।
বাগানের মালিক সুমন বলেন, বরই গাছের প্রতি আমার ছোট কাল থেকেই ভালোবাসা শুরু হয়। প্রথমে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরী আপেল কুলের ২৫০ পিস চারা কিনে পুকুর পাড়ে লাগাই, পরে বন্যার কারণে ৫০ টি গাছ মরে যায়। সাত হাজার টাকা খরচ করে বরই টালে বেড়া দেই এবং পাখি যাতে নষ্ট না করে সেই জন্য ওপরে জাল টানিয়ে দেই। এছাড়া আনুষাঙ্গিক ৩ হাজার টাকা খরচে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম বছরেই আমার খরচের টাকা উঠে যায়। এ বছর প্রায় এক থেজে দেড় লাখ টাকার বরই বিক্রি করার আশা করছি। বরই গাছ ছাড়াও বাগানে আমার লেবুর বাগান করা আছে যেখান থেকেও আমি অনেক সফলতা পেয়েছি।
তিনি আরো জানান, আমরা দুই ভাই বরই টাল দেখাশোনা করি। বছরে দুই একবার পরিচর্যা করতে হয়। সেটি নিজেরাই করে থাকি এবং বরই বড় হলে তখন দেখাশোনার জন্য একজন লোকের প্রয়োজন হয়।
কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন সুলতানা বলেন, কেন্দুয়া উপজেলায় প্রায় ১৬ হেক্টর জমিতে বরই চাষ হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন মিক্সড ফলের বাগান ও রয়েছে। এর মধ্যে বড়ই, আম, লেবু, পেপে ইত্যাদি ফল রয়েছে। যারা বরইয়ের বাগান করেছে তাদের আমাদের কৃষি অফিসের মাঠকর্মীদের মাধ্যমে পরিচর্যা করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। আর তাদের মধ্যে যারা ভালো উদ্যোক্তা রয়েছে তাদেরকে আমরা কোনো প্রদর্শনী কিংবা অন্য কোনো সহযোগিতার দরকার হলে দিয়ে থাকি।
(ঢাকাটাইমস/১৬ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

মন্তব্য করুন