কবিতার বই বেশি, বিক্রি কম
অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এর ২২ দিন পেরিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত মেলায় নতুন বই এসেছে ২ হাজার ৪০৪টি। এর মধ্যে কবিতার বইয়ের সংখ্যা ৭৪১টি। সংখ্যার বিচারে কোনো একক ধরন হিসেবে এটাই সর্বোচ্চ।
গত চার বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২০ সালে কবিতার বই এসেছিল ১ হাজার ৫৮৫টি, ২০২১ এ ৮৯৮টি, ২০২২ এ ১ হাজার ৬০টি এবং ২০২৩ এ ১ হাজার ২৪৭টি। প্রতিবছরই একক ধরন হিসেবে কবিতার বই ছিল সর্বোচ্চ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, সংখ্যায় সর্বোচ্চ হবার পরও কবিতার বইয়ের কাটতি কম। চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনের জাহিদ হাসান বলেন, কবিতার বই সচরাচর কম বিক্রি হয়। কবিতার পাঠক কম। মানুষ গল্পটা যত সহজে বোঝে, কবিতাটা তত বুঝে না। পাঠকরা ক্লাসিক লেখকদের বই খেঁাজে বেশিরভাগ, এ কারণেও নতুনদের বই কম বিক্রি হয়। আর নতুনদের অনেকেই কবিতার বই প্রকাশ করেন।
মিজান পাবলিশার্সের প্রত্যয় পাল বলেন, বেশিরভাগ পাঠকই উপন্যাস পছন্দ করেন। তবে অনেক পাঠক আছেন যারা কবিতা পছন্দ করেন। িকন্তু সেই সংখ্যাটা কম।
পরিবার পাবলিকেশনের জান্নাতুল বাকি বলেন, শুধু কবিতা বললে ভুল হবে। আমাদের পাঠাভ্যাসটাই কমে গেছে। প্রিন্ট মিডিয়া থেকে আমরা এখন ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে চলে এসেছি। মোবাইল বা ডিভাইসে আসক্ত হবার কারণে সাহিত্যচর্চার জায়গাটা সীমিত হয়ে গেছে।
তায়িব অনন্ত একজন তরুণ লেখক। তিনি জানান, সবসময়ই দেখেছেন মানুষ কবিতার বিষয়ে অনাগ্রহী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, কবিতা হলো ভাষার সর্বোত্তম ও সূক্ষ্ম শিল্প। কবিতা সবাই পাঠ করে না। কবিতা পড়ার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ আছেন, যারা কবিতা ভারোবাসেন। সুতরাং, কবিতার বিক্রি কম দেখে এর গুরুত্ব কম, এটা বলা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, কবিতার বই স্বাধীনতার পরে কয়েকবছর সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। তারপরে কমে গেছে। বর্তমানে অর্থবিত্ত ও প্রযুক্তির বিকাশের কারণে বই প্রকাশ করা সহজ হয়ে গেছে। ফলে অনেকেই বই প্রকাশ করে। এটা অনেকটা ‘আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’ এর মতো। তার মানেই যে কবিতা হিসেবে এটার মান, ছন্দ ও বার্তা সুন্দর, এমন না। সাহিত্যের মূল্যবান শাখা হলো কবিতা। কবিতার মূল্য কখনো কমবে না।
(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এসকে/এসআইএস)