বেইলি রোডের আগুন

অগ্নিঝুঁকি জেনে ছয় মাসেও ব্যবস্থা নেয়নি ফায়ার সার্ভিস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪, ২২:০৪ | প্রকাশিত : ০৩ মার্চ ২০২৪, ২১:০৮

বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগতে পারে— এমন পূর্বাভাস ছয় মাস আগেই জেনেছেন ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) অধীর চন্দ্র হাওলাদার কিন্তু তিনি অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থা নেননি গত বৃহস্পতিবার রাতে ভবনটিতে আগুন লেগে ৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আরও প্রায় ৭০ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের পাঁচজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা অধীর চন্দ্র হাওলাদার সরজমিনে ভবনটি পরিদর্শন করে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে ভবন মালিক একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নোটিশ দিয়েছেন ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন। কিন্তু এরপর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও তিনি রহস্যজনক কারণে নীরব ছিলেন। অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই চলছিল ভবনটির কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবস্থা নিতে অধীর চন্দ্র হাওলাদার জানাননি।

ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) অধীর চন্দ্র হাওলাদার ঢাকা টাইমসকে বলেন, বেইলি রোড এর আশপাশের এলাকার দায়িত্বে তিনি নিয়োজিত আছেন। গত বছর মার্চ মাসে তিনি এই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। তিনি বলেন, তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার ভবনগুলোতে অগ্নিঝুঁকি আছে কিনা তা তিনি পরিদর্শন করেন এবং সেই অনুযায়ী প্রতিবেদন তৈরি করে থাকেন। অগ্নিঝুঁকি থাকা ভবনগুলো চিহ্নিত করার পর সেই ভবন মালিককে ঝুঁকি এড়াতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নোটিশ দেন।

অধীর চন্দ্র হাওলাদার বলেন, নোটিশের পরও যদি তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না করেন তাহলে আমরা সেই ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশন রাজউকের কাছে চিঠি দিয়ে থাকি এবং ভবনের সামনে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভবনটি অগ্নি ঝুঁকিতে আছে মর্মে ব্যানার টানিয়ে রাখি

বেইলি রোডের আগুনও লাগা গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিঝুঁকি ছিল কি না এবং সেখানে ফায়ার সার্ভিস কী ভূমিকা পালন করেছে— এমন প্রশ্নের জবাবে অধীর চন্দ্র বলেন, অনেক আগে থেকেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল আমি সেখানে সরেজমিন পরিদর্শন করে অনেক অনিয়ম অগ্নিঝুঁকি থাকার প্রমাণ পেয়েছি। তাদের বারবার সতর্ক করার পরও ভবন মালিক রেস্তোরাঁ মালিকপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বর ভবন মালিককে এবং একই মাসের তারিখ আমব্রোসিয়া রেষ্টুরেন্ট এবং মিউজিক ক্যাফের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নোটিশ করা হয়েছিল নোটিসে তাদেরকে ৯০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে জবাব দিতে বলা হলেও তারা কোনো কার্যক্রমই পালন করেননি।

ভবনটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছিল কি না এবং সেখানে অগ্নিঝুঁকি ব্যনার টানানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে অধীর চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘৯০ দিন পার হলেও সেখানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ব্যানার টানানো হয়নি, এটা ভুল হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সিটি করপোরেশন বা রাজউক কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়নি বলেও স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার শিকার রেস্তোরাঁগুলোর সব কর্মকাণ্ড ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক অবগত ছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না।

(ঢাকাটাইমস/০৩মার্চ/এমএইচ/টিআই/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :