সড়কের পাশে আলুর হিমাগার, অব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তি

সাথী হিমাগারে আলু রাখতে আলুবোঝাই পরিবহনগুলো দাঁড়িয়ে আছে ব্যস্ত সড়কে। আলু দ্রুত খালাস না হওয়ায় কিংবা এ নিয়ে কোনো তদারকি না থাকায় সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে আছে। এ নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা।
গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবির চাঁনপাড়া-নিশ্চিন্তা সড়কে এই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে দেখা যায় অসংখ্য আলুবোঝাই পরিবহনের সড়কে দাঁড়িয়ে থাকায় চাঁনপাড়া থেকে শিরট্রী পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমিক, রিকশা-ভ্যানসহ সব ধরনের পরিবহন চালকদের।
সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে বাধ্য হয়ে বেকার সময় পার করতে হয় চাঁনপাড়া স্টেশনের অর্ধশতাধিক সিএনজির চালকের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকলেও হিমাগারের ভেতরে আলুবোঝাই পরিবহনগুলো খালাস না হওয়ায় সড়কে যানজট নিরসন হয় না। সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সড়কে দীর্ঘ যানজট, হট্টগোল থাকে। পরে পুলিশ এসে যানচলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে।
সোমবার সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, পাঁচবিবিসহ আশপাশের উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত ভটভটি, অটোভ্যান ও ট্রাক্টর বোঝাই করে হাজার হাজার বস্তা আলু চাঁনপাড়া সাথী হিমাগারে রাখছেন এলাকার কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সাথী হিমাগারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিবহন পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা শত শত আলুবোঝাই পরিবহন দাঁড়াচ্ছে চাঁনপাড়া-নিশ্চিন্তা সড়কে। মুহূর্তে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটে। ভোগান্তিতে পড়ছেন সব ধরনের পরিবহনের পাশাপাশি জনসাধারণ। তবে, পরিবহন ও জনসাধারণের যে ভোগান্তি হচ্ছে সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই হিমাগার কর্তৃপক্ষের।
চাঁনপাড়া সিএনজি স্ট্যান্টের চেইন মাস্টার আজিজার রহমান বলেন, কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছেন চাঁনপাড়ার সাথী হিমাগার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সড়কে যানজট নিরসনে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। প্রতিদিন চাঁনপাড়া থেকে নিশ্চিন্তা ও জয়পুরহাটে যাত্রী নিয়ে প্রায় ৮০টি সিএনজি দিনে তিন থেকে চারবার যাতায়াত করে। যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার চালান। কিন্তু হিমাগারের কারণে সড়ক যানজট সৃষ্টি হয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে কোনো সিএনজি যেতে পারেনি। তাহলে এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?
লয়াপাড়া এলাকার মাইক্রোবাসের চালক আরিফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় যানজটের কারণে সড়কে আটকে আছি। আমি এই এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সেন্টারে নিয়ে যাওয়া-আসা করি। কিন্তু সাথী হিমাগারের কারণে রাস্তায় সৃষ্টি হওয়া দীর্ঘ যানজটের কারণে মাঝেমধ্যেই সমস্যায় পড়তে হয়। হিমাগার কর্তৃপক্ষ তাদের লোক দিয়ে সড়কে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা করলে এই সমস্যা আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
সাথী হিমাগার লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমার হিমাগারে অবব্যস্থাপনা নেই। গত বছর কৃষকেরা এই হিমাগারে আলু রেখে সুফল পাওয়ায় কৃষকেরা এ বছর একসঙ্গে আলু রাখতে আসায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, পুলিশ পাঠানো হয়েছে। চাঁনপাড়া এলাকায় সড়কের যানজট নিরসন করে
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা সুলতানা বলেন, হিমাগারের কারণে সড়কে যানজটের বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে হিমাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।
(ঢাকাটাইমস/৫মার্চ/এআর)

মন্তব্য করুন