গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে ডুমরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ
ধর্ষণ মামলা দায়ের করার পর গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) মামলা দায়েরের পর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি। এমনকি তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনও সুইচ অফ রয়েছে।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা ভুক্তভোগী তরুণী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর বিচারক রনক জাহান জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি শেষে ওই তরুণীকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। তবে জবানবন্দিতে ধর্ষণের বিষয়ে তিনি কী বলেছেন জানা যায়নি।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকালে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তরুণী ও তার মাকে বাড়ি থেকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছিল। শুক্রবার আদালতে পাঠালে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ২২ ধারায় তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান এখনও আদালত থেকে জামিন নেয়নি। তবে উপজেলা পরিষদেও যাননি। তিনি পলাতক আছে রয়েছেন বলে ধারণা করছি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী তরুণীর দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই সোলাম রসুল সরদার। আদালত অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ডুমুরিয়া থানাকে নির্দেশ দেয়। এদিকে বৃহস্পতিবার ওই তরুণীকে উদ্ধারে অভিযান চালায় র্যাব ও পুলিশ। পরে তরুণী ও তার মাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সারারাত থানায় অবস্থানের পর শুক্রবার বিকাল ৩টায় তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ২৭শে জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার সময় ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদ শাহপুর বাজারে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর ওইদিন রাতেই ভিকটিম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার জন্য তিনি গত ২৮শে জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসির সামনে গিয়ে জানতে পারেন ওসিসি কর্তৃপক্ষ উপজেলা চেয়ারম্যান গাজি এজাজ আহমেদ ও তার চাচাতো ভাই ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভিকটিমকে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান না করে ছাড়পত্র প্রদান করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ সময় ভিকটিম ও তার মা ওসিসি থেকে বের হওয়ামাত্র ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জন ভিকটিম ও তার মাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলসহ গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন ভিকটিম ও তার মা ফাতেমা বেগমকে খুন-জখম করার হুমকি দিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে ভিকটিমকে দিয়ে পুলিশের কাছে মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে বাধ্য করে।
(ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/পিএস)