বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা

প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:০৩ | প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৯

সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদকারী ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ (১৯৭৫-১৯৭৯) চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য চার সচিবের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

পাঁচ ব্যক্তির করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেন।

আদালত বলেছেন, কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব ও অর্থ সচিব থাকবেন। কমিটিকে আগামী ৪ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলো। রিটটি চলমান তদারকিতে থাকবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. বাকির উদ্দিন ভুইয়া। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. আবু হানিফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

অ্যাডভোকেট বাকির উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও তার নিকটাত্মীয়দের নৃশংসভাবে হত্যার পর বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল-মিটিং সব বন্ধ করে দেয়। তখন মানুষের মনে একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। ওই দিনই নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, যশোর, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়।

পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় মুজিব বাহিনী নামে দুটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গঠিত হয়। তখন কয়েক হাজার বঙ্গবন্ধু ভক্ত ছাত্র-তরুণ-যুবক এ দুই বাহিনীতে যোগদান করেন। তারা ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে লিপ্ত হন।

তাদের প্রতিরোধের কারণে তৎকালীন সরকার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু করে। ওই সময়ে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকার জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীকে নানাভাবে সহযোগিতা করত।

কিন্তু ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় মোর্চা সরকার’ জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনীর সদস্যদেরকে বাংলাদেশের বিডিআরের কাছে হস্তান্তর করলে তাদের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দিন, জেল-জুলুম ও নির্যাতন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৪৭ বছর পার হলেও এখনো সেই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অনেকেই চরম কষ্ট-অবহেলায় জীবনযাপন করছেন।

গত ১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। নেত্রকোনার আনিস খোন্দকার, সাইদুল কাদির, সুনামগঞ্জের ইউসুফ আলী, পরিমল সরকার ও গাজীপুরের স্বপন চন্দ হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে সোমবার আদালত উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯এপ্রিল/কেএ/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :