শ্রীপুরে তীব্র দাবদাহে ঝরে পড়ছে লিচু

গাজীপুরের শ্রীপুরে কেওয়া পূর্ব খণ্ড, তেলিহাটি, জৈনা বাজার, গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি, কাওরাইদ এলাকায় তীব্র দাবদাহের কারণে বাগানগুলোতে ঝরে পড়ছে লিচু। এপ্রিল জুড়ে চলছে দাবদাহ। আর মাসখানেক পর শুরু হবে মধু মাস। এ মাসে আম, লিচু, জামরুলসহ নানা ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু দাবদাহ অব্যাহতভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাগানগুলোত লিচু ঝরে পড়ছে। আর মাস খানেক পর বাজারে উঠবে শ্রীপুরের দেশীয় চায়না-৩ জাতের লিচু। তা না হয়ে উল্টো চিত্র। তীব্র দাবদাহে লিচু ঝরে পড়ে যাওয়ায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছে চাষিরা।

প্রচণ্ড গরম আর তাপপ্রবাহে লিচুর গুটি কোনোভাবে ঠেকাতে না পারায় দিশেহারা চাষিরা। এ অবস্থায় গাছের গোড়া পানি দেয়ার পরামর্শ কৃষি কর্মকর্তারা। তীব্র তাপপ্রবাহে বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষিতে। প্রচণ্ড গরম আর খরায় ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি।

শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া পূর্ব খণ্ডে লিচু চাষিরা জানান, লিচুর মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।

কেওয়া গ্রামের লিচু চাষি নজরুল মৃধা জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে লিচু উৎপাদন ভালো হবে ধারণা ছিল। কিন্তু লিচু যখন পরিপক্ব হতে শুরু করেছে ঠিক তখন দাবদাহ প্রচণ্ড আকারে বেড়ে যাওয়ায় বাগান থেকে অধিকাংশ লিচু ঝরে যাচ্ছে। এতে লিচু উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। লিচু বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি উঠবে কিনা এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। আগে যে লিচু গাছ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হত এখন সেই লিচু ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি হবে। গেল কয়েক দিন তীব্র দাবদাহে এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন লিচু চাষিরা। এদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, উপজেলায় এ বছর ৯৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এখান থেকে ৮৫০ মেট্রিক টন লিচু উপাদানের আশা করছেন। দীর্ঘ দিন ধরে জেলার অন্যান্য উপজেলার মত শ্রীপুরে তীব্র দাবদাহ চলছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে লিচুসহ বিভিন্ন ফসলের করণীয় বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

শ্রীপুর উপজেলা টেপির বাড়ি গ্রামের লিচুচাষি শফিকুল জানান, অন্যবারের চেয়ে এবার দাবদাহ বেশি থাকাতে আমার দুটি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লিচু যখন পরিপক্ব হতে শুরু হয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তে দাবদাহ বেশি হওয়াতে লিচু ঝরতে থাকে। ফলে আমি দুটি বাগানে পানি সেচ দিই। তাতে কিছুটা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাই। এ ভাবে দাবদাহ অব্যাহত থাকলে এবার লিচুর ফলন বিপর্যয় হবে। ক্ষতির মধ্যে পড়বে লিচু চাষিরা।

কৃষিবিভাগ জানিয়েছে, প্রচণ্ড দাবদাহের সময় লিচুর ক্ষেত্রে গুটি ঝরে পড়ছে। এজন্য সকাল-বিকাল পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অনেক সময় যাতে গাছে রসের অভাব না হয়। লিচুর গুটি ঝড়ে পড়ছে অনেক সময় পটাশের অভাবে এবং ব্রুণ সারের অভাবে লিচু ঝরে যেতে পারে। প্রতি ১০ লিটার পানিতে এক গ্রাম ব্রুন এবং ১০০ গ্রাম পটাশ মিশ্রিত করে বিকালে বা সন্ধ্যার আগে যদি তারা স্প্রে করে তাহলে এই ঝরার সম্ভাবনা কমে যাবে লিচুর উৎপাদন ভালো হবে।

(ঢাকা টাইমস/০৩মে/এসএ)