তৃতীয় দিনেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মবিরতি
তৃতীয় দিনেও কর্মবিরতি পালন করেছেন সারাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যকার বৈষম্য দূরীকরণসহ অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকাল এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সরকার বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান আন্দোলনরতরা।
সরকারে বিশেষায়িত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিতে গ্রাহকদের প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দিয়ে থাকে। জরুরি বিদ্যুৎ সেবা চালু রেখে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে।
কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা, চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তায় রয়েছে বিস্তর ফারাক। পদ, পদবি, পদোন্নতি, বেতন গ্রেড, সাপ্তাহিক ছুটি, একই প্রতিষ্ঠানে একই পদে নিয়মিত এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, লোকবলের স্বল্পতাসহ সব ক্ষেত্রেই বৈষম্যের শিকার সমিতির কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। এসব বৈষম্যের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বরং এসব ন্যায়সংগত অধিকারের কথা বললেই নানাভানে হয়রানি করা হয়। এমনকি আন্দোলন শুরুর পরেও নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আন্দোলন বন্ধে নানামুখী চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তারা আরও জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দ্বৈত নীতি ও অদক্ষতার কারণে নিম্নমানের মালামাল ক্রয় এবং ব্যাপক জনবলের ঘাটতির কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হতে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি গ্রাহক। তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা এবং কর্মচারী। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও পদ-পদবি, বেতন-ভাতা, বোনাসসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন।
আন্দোলনরতরা জানান, রোদ-বৃষ্টি ঝড় যে কোনো দুর্যোগে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ ঘরেই নিগ্রহের শিকার। বিআরইবি’র বিমাতাসুলভ আচরণে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের বিদ্যমান বৈষম্যগুলো দূর করে বাপবিবো এবং পবিস একই সার্ভিস কোড পরিচালনা করা, ৫% প্রণোদনা জুলাই-২৩ হতে কার্যকর, ২০১৫ সালের পে- জুলাই-১৫ হতে সমধাপে কার্যকর, ৪০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল ভাতা, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, অতিরিক্ত কাজের জন্য ওভারটাইম/ডিস্টারবেন্স এলাউন্স, চিকিৎসা ভাতা, অডিটের নামে হয়রানি না করাসহ সরকার প্রদত্ত সকল সুযোগ-সুবিধা বিআরইবির ন্যায় সমিতির জন্যও সমভাবে বাস্তবায়ন চান তারা।
ঢাকাটাইমস/০৭মে/টিআই/ইএস