হেফাজতে নারীর মৃত্যু: র‌্যাব-১৪ অধিনায়ককে সরানো হচ্ছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৯ মে ২০২৪, ২০:৫৫
অ- অ+

র‌্যাব হেফাজতে সুরাইয়া খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খানকে প্রত্যাহারের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাকে সদরদপ্তরে আনা হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত একটি সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছে। ব্যাটালিয়নটির নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান। পুলিশের এই কর্মকর্তা বর্তমানে র‌্যাব সদরদপ্তরের ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড ফরেনসিক উইংয়ের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।

এর আগে গত শুক্রবার র‌্যাব হেফাজতে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সুরাইয়া খাতুনের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি দেশজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর তাকে দাফন করা হয়েছে। তবে সুরাইয়ার মৃত্যুর দায় নিতে চাইছে না র‌্যাব। তারা বলছে, ‘র‍্যাব আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যাবে। পাশাপাশি ডাক্তারি পরীক্ষার মধ্যদিয়ে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’

যা জানা গেছে:

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র‍্যাবের হাতে আটক সুরাইয়া খাতুন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে মারা যান। পরিবারের দাবি তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলে হয়েছে। এই ঘটনার ১২ ঘণ্টা পর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের উপস্থিতিতে হাসপাতালে পড়ে থাকা মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়। শুক্রবার সকাল সাতটায় র‌্যাব সদস্যরা সুরাইয়া খাতুনকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার দুপুরে তাকে দাফন করা হয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার ভেড়ামারি গ্রামের রেখা আক্তার নামে এক গৃহবধূ হত্যা মামলার প্রধান আসামি নিহতের স্বামী তাইজুল ইসলাম লিমন ও তার মা সুরাইয়া খাতুনকে আটক করে র‌্যাব। তারা ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। আটকের পর রাতে র‌্যাব হেফাজতেই ছিলেন মা-ছেলে। শুক্রবার সকালে সুরাইয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যায় র‌্যাব সদস্যরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, শুক্রবার সকাল সাতটায় র‍্যাব সদস্যরা সুরাইয়া খাতুন নামের এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাকে আনার পর কর্তব্যরত ডাক্তার বিনীত দাস তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, 'মূলত মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।'

র‌্যাব হেফাজতে কীভাবে সুরাইয়ার মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে তার সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি ভৈরব র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মো. ফাহিম ফয়সাল। তিনি বলেন, ‘হত্যা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর ভৈরব ক্যাম্পের হেফাজতে রাখা হয়। পরবর্তীতে হেফাজতে থাকা অবস্থায় সুরাইয়া খাতুন নামের এক আসামি রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’

কিশোরগঞ্জ জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান জানান, সন্ধ্যা সাতটার দিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সুরাইয়া বেগমের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

সুরাইয়া খাতুনের ভাশুর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। তাকে গ্রেপ্তারের পর নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার দাবি করেন তিনি।

এর আগে গত বছরের মার্চে নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিন নামে একজন সরকারি কর্মচারির মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় তখন দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়; সমালোচনায় পড়ে বাহিনীটি।

(ঢাকাটাইমস/১৯মে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কায়কোবাদ
পুরানা পল্টনের সাব্বির টাওয়ারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ারের ৭ ইউনিট
যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা ফ্যাসিবাদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে : সালাম
ডা. জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানাল পুলিশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা