দিনাজপুরের আলোচিত ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ মে ২০২৪, ১৬:৩২| আপডেট : ০৮ মে ২০২৪, ১৬:৪৪
অ- অ+

জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে দিনাজপুরের আলোচিত ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের (৭৩) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে মামলাটি হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নূর আলম বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় মামলাটি করেন। মামলা নং-০৩।

জানা গেছে, আবুল কাশেমের এক ছেলে দেশের একটি জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করার পর কোনো অবৈধ সম্পদের খোঁজ পায়নি দুদক।

সংস্থাটি বলছে, তবে ব্যবসায়ী আবুল কাশেম সম্পদ বিবরণীতে ৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি সম্পদের তথ্য গোপন করেছিলেন। যা দীর্ঘ তদন্তে বের হয়ে আসে।

দুদক সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছে, আবুল কাশেম দিনাজপুরের একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। শহরে তার বড় দুইটি অটো রাইসমিল, দুইটি নামকরা আবাসিক হোটেলসহ সুউচ্চ একাধিক বাড়ি রয়েছে। এসব তথ্য তিনি গোপন রেখেছিলেন।

২০২০ সালে দুদকে ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন একজন ব্যক্তি। পরে অনুসন্ধান চালায় দুদক। এতে আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে দখলে রাখার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। পরে তার বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করে দুদক।

এরপর ৬ কোটি ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৩ টাকার টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে ২ কোটি ৮২ লাখ ১২ হাজার ৩৫৪ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে আবুল কাশেম তার নিজ নামীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন। তদন্তে ‍দুদক তার পুলিশ সুপার ছেলের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান করে। তবে তার নামে কোনো সম্পদ পাওয়া যায়নি।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, দিনাজপুর সদরের চুড়িপট্টি এলাকার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে আবুল কাশেম ২ কোটি ৮২ লাখ ১২ হাজার ৩৫৪ টাকার মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং ৬ কোটি ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

‘অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক তা দখলে রাখার অভিযোগটি প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে তার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী নোটিশ নং-০০০৩৩২৬ জারি করা হয়। তৎপ্রেক্ষিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আবুল কাশেম বিগত ০৫/০২/২০২০ খ্রিঃ তারিখে তার নিজ নামীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৩,৮১,৯৮,০০০ টাকার স্থাবর ও ১৬,৫০,০০০ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ ৩,৬৯,০০,০০০ টাকার দায়-দেনার হিসাব বিবরণী কমিশনে দাখিল করেন।’

এজাহারে আরও বলা হয়, ‘অনুসন্ধান করে আবুল কাশেমের সম্পদ বিবরণীতে দাখিলকৃত স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৮১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৮১ লাখ ৯৮,০০০ টাকা পাওয়া যায়।’

‘আবুল কাশেমের দাখিলকৃত অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ (১৬,৫০,০০০+৩,২৩,২৫,৫৮০)= ৩,৩৯,৭৫,৫৮০ টাকা (ব্যবসার পুঁজি ৩,২৩,২৫,৫৮০ টাকা গোপন ধরা হয়নি কারণ তিনি উক্ত তথ্য সম্পদ বিবরণীতে দাখিল না করলেও আয়কর নথিতে দাখিল করেছেন) এবং সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৬,২১,৮৭,৯৩৪ টাকা পাওয়া যায়। তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন (৬,২১,৮৭,৯৩৪- ৩,৩৯,৭৫,৫৮০)= ২,৮২,১২,৩৫৪/- টাকা।’

এজাহারে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানকালে আবুল কাশেমের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ (৩,৮১,৯৮,০০০+৩,৩৯,৭৫,৫৮০)= ৭,২১,৭৩,৫৮০ টাকা দাখিল করেন। কিন্তু যাচাইকালে তার নামে মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ (৩,৮১,৯৮,০০০+৬,২১,৮৭,৯৩৪)= ১০,০৩,৮৫,৯৩৪ টাকা পাওয়া যায়। তিনি তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন (১০,০৩,৮৫,৯৩৪-৭,২১,৭৩,৫৮০)= ২,৮২,১২,৩৫৪/- টাকা যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

যাচাইকালে আবুল কাশেমের নামে দায়-দেনার পরিমাণ ৭৯,০৬,৬৭৬ টাকা পাওয়া যায়। তার দায়-দেনা বাদে নিট সম্পদের পরিমাণ (১০,০৩,৮৫,৯৩৪-৭৯,০৬,৬৭৬)= ৯,২৪,৭৯,২৫৮ টাকা এবং পারিবারিক ব্যয় ও কর পরিশোধসহ মোট ব্যয় ১,৩০,৮৯,৩০৮ টাকাসহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ মোট (৯,২৪,৭৯,২৫৮+১,৩০,৮৯,৩০৮)= ১০,৫৫,৬৮,৫৬৬/- টাকা পাওয়া যায়। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৪,৩৭,৪৪,২৩৩/- টাকা পাওয়া যায়। সুতরাং তিনি (১০,৫৫,৬৮,৫৬৬-৪,৩৭,৪৪,২৩৩)= ৬,১৮,২৪,৩৩৩/- টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখেছেন। আবুল কাশেম ৬,১৮,২৪,৩৩৩/ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৮মে/এমআই/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতিতে সরকারের সংশ্লিষ্টতা? যা বললেন উপদেষ্টা ফারুকী
ভেষজ ঔষধি ঢেঁড়স ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
গরমে স্বাস্থ্য রক্ষায় কোন পাত্রে কতটুকু পানি পান করা নিরাপদ
ইলন মাস্কের স্টারলিংকের অনুকূলে লাইসেন্স হস্তান্তর করল বিটিআরসি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা