কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির শ্রেষ্ঠ সম্পদ: বাংলাদেশ ন্যাপ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তিনি আমাদের রেনেসাঁর অগ্রদূত। নজরুল না জন্মালে অবহেলিত বঞ্চিত শোষিত বাঙালি মুসলমানের আত্মদর্শন সম্ভব হতো না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।

শুক্রবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।

নেতারা বলেন, ‘কাজী নজরুলের অসামান্য ও ব্যতিক্রম সৃষ্টিধারা ও উজ্জ্বল কর্মপ্রবাহ বাংলা সাহিত্যকে যেমন দিয়েছে সমৃদ্ধ সংযোজন, তেমনি বাঙালি জাতিকে দিয়েছে গভীর প্রণোদনা শক্তি। নজরুল চেতনা ও তাঁর দর্শন দিয়েছে নব নব পথের সন্ধান। জাতীয় কবি হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি আজ সময়ের দাবি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সরকার জাতীয় কবিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে পারেনি, যা দুঃখজনক।’

তারা বলেন, ‘দ্রোহ’ যেমন দিয়েছে তাকে বিদ্রোহী’র অপরাজেয় মুকুট, তেমনি বাংলা তথা ভারতবাসীর অন্তরস্থিত চেতনায় দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে, যা উদ্দীপনার উৎস রূপে প্রতিভাত হয়। কাজী নজরুল সাম্রাজ্যবাদের ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁর রচনা ও সৃষ্টিশীল কর্মতৎপরতার মধ্যে বিদেশি শক্তির শোষণ দুঃশাসন থেকে মুক্তিই ছিল প্রধান লক্ষ্য।’

ন্যাপ নেতারা বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম সাম্রাজ্যবাদরে কালো থাবা থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কলম হয়েছিল তাঁর অস্ত্র। ইংরেজদের শোষণ অপশাসন জাতির অবস্থাকে বিপন্ন করে তুলেছিল। ইংরেজদের মূল লক্ষ্য সমস্ত অর্থ ও সম্পদ লুট এবং নিজ দেশে পাচার করা। নবযুগে কাজ করার সময় নজরুলের রাজনৈতিক চিন্তার পরিপক্কতা তৈরি হয়। বিস্তার ঘটে রাজনৈতিক চিন্তার। ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি মুজফ্ফর আহমেদের সঙ্গী হন। আগ্নেয়গিরির উদগীরণের মতো বিস্ফোরিত নজরুলের ‘বিদ্রোহী কবিতা’। তিনি এমনই বিদ্রোহী তিনি বলেন, ‘বিশ্ব চাড়ায়ে উঠিয়াছি একা, আমি চির উন্নত শির’।’

তারা বলেন, ‘ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি এর আগে কোনো কবি সাহিত্যিক তো দূরের কথা, কোনো রাজনৈতিক নেতাও করার সাহস করেননি। তিনি ধূমকেতু পত্রিকায় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেন। তখন স্বরাজ নিয়েছিল নেতাদের মতবিরোধ এই সময় কবি বললেন ধূমকেতু পত্রিকায়। নজরুল ধূমকেতু’র ১৩শ সংখ্যায় ১৩ অক্টোবর ১৯২২ এ ভারতের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন- ‘স্বরাজ টরাজ বুঝি না, কেননা, ও কথাটার মানে এক এক মহারথী এক এক করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশ বিদেশিদের অধীনে থাকবে না। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ দায়িত্ব, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা, শাসনভার সমস্ত থাকবে ভারতের হাতে।’

নেতারা আরো বলেন, ‘ভারতের স্বাধীনতায় যেমন কাজী নজরুল ইসলামের অবদান রয়েছে তেমনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে কবি হয়েছেন প্রণোদনা শক্তি। ভীত সন্ত্রস্ত হয়েছে ব্রিটিশ সরকার। দ্রোহের কবি, সাম্যের কবি, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক শোষণ শাসনের বিরুদ্ধে জ্বলন্ত প্রতিবাদ কাজী নজরুল ইসলাম।’

(ঢাকাটাইমস/২৪মে/জেবি/এজে)