কমিউটার ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার, ভোগান্তির শেষ নেই

মেহেদী হাসান, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ জুন ২০২৪, ১৮:০৯| আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ১৮:১৫
অ- অ+

ঈদের ছুটি কাটাতে ট্রেনে বাড়ি যাবেন দিনাজপুরের আকরাম আলী। টিকিট কাটতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসেছেন সকালে। কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি দুই ঘণ্টা ধরে। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু কাউন্টারে এসে যেন বাড়ি যেতে আর ইচ্ছে করছে না। আমার মতো লাখ লাখ মানুষের এই দীর্ঘ সময়ের ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নাই।’

কমিউটার ট্রেনের টিকিটের জন্য কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটের জন্য এভাবেই হাহাকার করছেন যাত্রীরা। ঈদযাত্রার প্রথমদিন বুধবার বেশ কয়েকটি ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়ের ভোগান্তি শেষ হয়নি বৃহস্পতিবারও। টিকিটের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বেগ পোহাতে হচ্ছে। এতে করে নারী, শিশু ও বয়স্করা; বিশেষ করে পরিবার নিয়ে রওয়ানা হওয়া যাত্রীরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিন ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

ঈদযাত্রায় আন্ত:নগর ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া যায়, ফলে এতে ভোগান্তি নেই। কিন্তু কমিউটার ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে হয় কাউন্টার থেকে। ট্রেন ছাড়ার এক ঘণ্টা আগে টিকিট কাটা যাবে— রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এমনটি জানালেও বাস্তব দৃশ্য পুরোপুরি ভিন্ন। টিকিটের জন্য কমিউটারের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে হচ্ছে কাউন্টারে।

ভোর থেকেই টিকিটের জন্য লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন জুয়েল মাহমুদ। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘টিকিট কাটতে সকাল সকাল না এলে টিকিট পাবো না। এটা ভেবেই সকালে চলে এসেছি কমলাপুর। আমার চারটা টিকিট লাগবে। দীর্ঘ সময় পর টিকিট পেলেও সিট পেয়েছি তিনটা। একটা টিকিট দাঁড়িয়ে যাওয়ার। কী আর করার, ঈদে বাড়ি তো যেতেই হবে। তাই কষ্ট হলেও টিকিট কাটলাম।’

রাজশাহী মোস্তফা মালত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে টিকিটের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন সকাল থেকে। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজশাহীতে যাব। বাস ভাড়া অনেক বেশি হওয়ায় ট্রেনে করে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাস্তায় যানজট বেশি তাই যেতে সময়ও লাগবে অনেক। এজন্য ট্রেনের টিকিট কাটতে দাঁড়িয়ে আছি সকাল থেকে। মনে হচ্ছে সময়মতো ট্রেন ছাড়ছে, কিন্তু টিকিট পেতে লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। টিকিট সহজে পাওয়া গেলে এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া যেতো।’

এদিন সকাল সোয়া ৮টা পর্যন্ত আন্তনগর এবং কমিউটার মিলিয়ে ১২টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছিল আরও ৫টি ট্রেন। ২টি ট্রেন কিছু সময় পরই ছেড়ে যাওয়ার কথা। এছাড়াও ৬৯ জোড়া ট্রেন ছেড়ে যাবে দেশের বিভিন্ন গন্তব্য স্থানে।

টিকিট হাতে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকা ফাহিমা বেগম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আসার পর থেকেই দেখছি ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে। এটা দেখে খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু টিকিট অনলাইনে না পাওয়ায় ভোগান্তি বেশি। কাউন্টারে টিকিট কাটতে গিয়ে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। দিনের শুরুর মতোই যেন বাকি ট্রেন যথাসময়ে স্টেশন ছাড়ে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।’

খুলনা যাওয়ার জন্য ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনে বসে আছেন হানিফ মৃধা। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ট্রেনে যাওয়ার আগে শুনলাম ট্রেন নাকি সময়মতো পাওয়া যায় না। কিন্তু কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে আমার ধারণা পাল্টে গেছে। ট্রেন প্লাটফর্মে দেখে স্বস্তি পেয়েছি। টিকিট নিয়ে বেগ পেতে হলেও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।’

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গতকাল থেকে ঈদযাত্রার প্রথম দিনে পারাবতের জন্য কিছুটা বিলম্ব হয়েছে কয়েকটি ট্রেনের। সেটা সমাধান হয়ে গেছে। আমরা সার্বক্ষনিক কাজ করে যাচ্ছি। কোনো ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় হবে না।’

(ঢাকাটাইমস/১৩জুন/এমএইচ/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এপ্রিলের ২৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার
নির্ধারিত সময়ের দুই মাস আগেই সব দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব: অর্থ উপদেষ্টা
উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময়, বিভিন্ন প্রস্তাব বাস্তবায়নের আশ্বাস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা