সাবেক দুই এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু
ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান (দিলিপ) ও বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক )।
দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সভায় সাবেক এই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। বিষয়টি ঢাকা টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
দুদক সূত্র জানায়, শওকত হাচানুর রহমান রিমন বরগুনা -২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সাবেক এই সাংসদের নিজ নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রুপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়, ঢাকার নলটোলা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট এক কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। এছাড়াও বরগুনার কাঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক সাংসদ শওকত হাচানুরের নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি ১৫ কোটি এক লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা ও অন্যান্য খাতে ৪৬ লাখ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগত ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ ৩টি গাড়ি ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়াও দুদকের অনুসন্ধানে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে।
এদিকে নরসিংদী-২ আসনের সাবেক সাংসদ আনোয়ারুল আশরাফ খান (দিলিপ) ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক।
দুদক সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ করবর্ষে তার স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা ও নিজ নামে আট কোটি ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৭ টাকাসহ মোট আট কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৬৩৭ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়াও সাবেক এই সাংসদের নিজ নামে নগদ ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ চার কোটি ৫২ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৫ টাকা, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাবদ দুই কোটি ২০ লাখ টাকা, নিজ নামে পাঁচ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে একটি টয়োটা এলিয়ন গাড়ির হদিস মিলছে দুদকের তদন্তে।
এছাড়াও সাবেক এই এমপির নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার, ডাম্প ট্রাক, প্রাইভেট কার ও জাহাজের মালিকানা রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ১০ হাজার ৩০০ টাকা ও সাংসদের নিজ নামে দুই কোটি ১৫ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকাসহ মোট তিন কোটি ৩৬ লাখ ১৫ হাজার ৬৬০ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ও নিজ নামে এক কোটি ৯ লাখ ২৩ হাজার ৯৬০ টাকা অকৃষি জমি এবং তার স্ত্রীর নামে এক কোটি ২১ লাখ দুই হাজার ৩২০ টাকা মূল্যের অকৃষি জমির মালিকানার তথ্য পেয়েছে দুদক। এছাড়াও দুদকের তদন্তে দেশে বিদেশে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদকের গোয়েন্দারা যার প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুদক টিম।
(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/ইই/এমআর)