ওলামা-মাশায়েখ মহাসম্মেলন
মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসতে না দিতে সরকারকে হুঁশিয়ারি
বিশ্ব ইজতেমায় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে আসতে না দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ওলামা-মাশায়েখরা। দাবি মানা না হলে সরকারের পতন হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
একইসঙ্গে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা, আলেমদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা ও শাপলা চত্বরের গণহত্যায় জড়িতদের বিচারসহ নয় দফা দাবিও জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘দাওয়াত ও তাবলিগ, কওমি মাদরাসা এবং দ্বীনের হেফাজতের লক্ষে’ উলামা-মাশায়েখ মহাসম্মেলন থেকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তাবলিগের সাধারণ সাথি ও কওমিপন্থী আলেম-ওলামারা এতে অংশ নেন। মূলত তারা তাবলিগ জামাতের মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর মধুপুর) বলেন, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। আমি বলব, কীসের পরামর্শ, এই সম্মেলন থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সরকারকে এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। ভিন্ন কোনো চিন্তা করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।
সরকারকে সহযোগিতা করবেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সরকারকেও আলেমদের সহযোগিতা করতে হবে। নয়তো পূর্ববর্তী সরকারের মতোই তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যদি বেয়াদবকে বাংলাদেশে আসতে দেয়, তাহলে সরকারকেও পালিয়ে যেতে হবে।
এদিন মহাসম্মেলন থেকে নয় দফা দাবি ঘোষণা করেন কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক।
নয় দফা ঘোষণায় বলা হয়, তাবলিগ নিয়ে বিচ্ছিন্ন মহলের সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। সাধারণ শিক্ষা সিলেবাসে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। আলেমদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের যাবতীয় মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। শাপলা চত্বরের গণহত্যায় জড়িতদের বিচার করতে হবে। ২০১৮ সালে টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে সাদপন্থীদের নৃশংস আক্রমণের বিচার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই মাওলানা সাদকে এদেশে আসতে দেওয়া হবে না। আলেমপন্থীদের বিশ্ব ইজতেমাই সরকারঘোষিত দুই পর্বে করতে দিতে হবে। কাকরাইল মসজিদ আজ থেকে কেবলমাত্র শুরায়ে নেজামের অধীনে পরিচালিত হবে এবং অভিশপ্ত কাদিয়ানিদের অবিলম্বে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
এদিন ইসলামি মহাসম্মেলনে যোগ দিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যায় আলেম–ওলামা জড়ো হন।
সম্মেলনে শীর্ষ এই আলেম বলেছেন, মানুষ কখনো নকল জিনিস গ্রহণ করে না। নকল বন্ধ করা সরকারের দায়িত্ব। নকল ধারার তাবলিগ চলতে পারে না। ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নকল তাবলিগ নানা সুবিধা নিয়েছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের আশপাশেও ঘুরঘুর করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে।
সম্মেলনে হেফাজত আমির মাওলানা শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা খলিল আহমাদ কাসেমী, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা নুরুল ইসলাম আদিব সাহেব হুজুর, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, মাওলানা শায়খ জিয়াউদ্দিন, মাওলানা সাজিদুর রহমান, ফরিদাবাদের মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
(ঢাকাটাইমস/৫নভেম্বর/এলএম/ইএস)
মন্তব্য করুন