আপত্তি থাকলেও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তোড়জোড়
মতামত উপেক্ষা করে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধনের চেষ্টা চালাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া এই আইনের সঙ্গে জড়িত অন্য মন্ত্রণালয়, অংশীজন ও খাতসংশ্লিষ্টদের গুরুত্বই দিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০০৫ সালে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণীত হয়। ২০১৩ সালে একবার সংশোধন করা হয়। এরপর ২০২২ সালে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরপর সংশোধনীর একটি খসড়া তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়।
২০২২ সালের ১৯ জুন থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত ২৮ দিন মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে ছিল খসড়াটি। এরপর অংশীজনদের আরও মতামত ও অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনে তবে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক থেকে একাধিকবার সংশোধনীর খসড়াটি অধিকতর যাচাইবাছাইয়ের জন্য ফেরত পাঠানো হয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপনের আগেই খসড়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে আপত্তি দিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আইন অনুবিভাগ। ওই বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত ১১ সদস্যের কমিটি খসড়াটি নিয়ে ১০টি পর্যবেক্ষণ দেয়।
খসড়ায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের তামাকজাতীয় পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, খুচরা শলাকা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা, বিক্রেতাদের স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণের প্রস্তাব রাখা হয়।
সেই অবস্থায় থাকা আইনটির সংশোধনী খসড়া এবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলার তোড়জোর করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই তড়িঘড়িতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
অভিযোগ রয়েছে, একাধিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী এই সংশোধনী পাস করানোর জন্য তড়িঘড়ি করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনটির সঙ্গে জড়িত অংশীজন ও খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত কিছু সংশোধনী কার্যকর হলে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রায় ১৫ লাখ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ী সংকটে পড়বে বলে আশংকা রয়েছে। এর সঙ্গে নিম্ন আয়ের পরিবারের প্রায় ৬০ লাখ মানুষের জীবিকা জড়িত।
অংশীজন ও খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, আইন সংশোধনীর বিপক্ষে তারা নন। তবে এ নিয়ে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ দরকার। যৌক্তিক সিদ্ধান্ত না নিলে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে তা বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খসড়া বিষয়ে আপত্তিগুলো নিয়ে অংশীজনসহ অন্য মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া দরকার। আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে নেওয়া গেলে এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না।
(ঢাকাটাইমস/০৬নভেম্বর/ডিএম)
মন্তব্য করুন