নিহত ফায়ার ফাইটার নয়নের বাড়িতে শোকের মাতম, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা

সচিবালয়ের আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ফায়ার সার্ভিসকর্মী সোয়ানুর জামান নয়নের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এক মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মধ্যে নয়ন ছিল ছোট। সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা নার্গিস বেগম। সন্তান বিয়োগের ব্যথা সইতে না পেরে বুক চাপড়ে করছেন আহাজারি।
নিহত সোয়ানুর জামান নয়ন (২৪) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান আটপড়িয়া গ্রামের কৃষক আখতারুজ্জামানের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন।
একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে শোকের মাতম বইছে পরিবারে। সবার চোখ অশ্রু ছলছল। আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীরাও কাঁদছেন নয়নের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে।
নিহতের স্বজনরা বলছেন, নয়নই ছিল পরিবারের ভরসা। তাকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখতেন তার মা-বাবা ও বোন। কিন্তু হঠাৎ এমন মৃত্যুতে যেন পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেল। এমন মৃত্যু তারা মেনে নিতে পারছেন না।
সচিবালয়ে লাগা আগুন নেভানোর সময় ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়কে বেরিকেড না দেওয়ায় সেই সড়ক দিয়ে ট্রাক ঢুকে পড়ায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ নিহতের স্বজনদের। ট্রাকচালককে অতি দ্রুত বিচারিআওতায় আনা এবং নয়নের অসহায় পরিবারের পাশে যেন সরকার দাঁড়ায়, সেই দাবি জানান তারা।
পরিবারের পক্ষ থেকে লোকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়নের মরদেহ আনতে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে তার স্বজনরা। ঢাকা থেকে মরদেহ নিয়ে রংপুরে ফেরার পর দাফন কার্য সম্পন্ন করা হবে। এ জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে।
এর আগে বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে যখন আগুন নেভানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছিল, শুরু হয়েছিল ফায়ার ফাইটারদের দৌঁড়ঝাপ, তখন পেশাগত দায়িত্ব পালনে তেজগাঁও থেকে ছুটে গিয়েছিলেন নয়নও। যুক্ত হয়েছিলেন আগুন নেভানোর কাজে।
পানির পাইপ সংযোগ দিতে সচিবালয়ের রাস্তার উল্টো পাশে যাচ্ছিলেন নয়নসহ আরও কয়েকজন। হঠাৎ বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় তাদের। এতে গুরুতর আহত হন নয়ন ও হাবিবুর। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে নয়নকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
প্রায় সোয়া ছয় ঘণ্টায় চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ১৯ ইউনিট। অন্যদিকে, উদ্ধারে সহায়তা করেছে সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।
(ঢাকাটাইমস/২৬ডিসেম্বর/এজে)

মন্তব্য করুন