লিবিয়ায় দালালের খপ্পরে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২৫| আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪২
অ- অ+

স্বপ্নের দেশ ইতালি যেতে দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় প্রাণ হারালো কিশোরগঞ্জ ভৈরবের যুবক সুমন (৪২)। তিনি শহরের লক্ষীপুর গ্রামের মাহমুদ হোসেনের ছেলে। নিহতের মরদেহ ফিরে পেতে স্ত্রী-সন্তানরা আর্তনাদ করছেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে ৪ মাস আগে দালালের খপ্পরে পড়ে স্বপ্নের দেশ ইতালি যেতে লিবিয়ায় পাড়ি জমান সুমন। সেখানে যাবার পর ডাংকিতে ইতালি যেতে কুমিল্লার দাদা নামের এক দালালের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি।

অভিযুক্ত দালাল চক্রের সদস্য উপজেলার শম্ভুপুর শান্তিপাড়া ইতালি প্রবাসী চাঁন মিয়ার মেয়ে ও মোজাম্মেল হকের স্ত্রী দালাল সুইটি বেগমের সাথে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে কথা বলতে বলেন। সে অনুযায়ী দালাল সুইটির সাথে যোগাযোগ করে ১০ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে সুমনকে লিবিয়া থেকে ডাংকিতে ইতালি পাঠানোর কথা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী তার পরিবার জায়গা জমি বিক্রিসহ ধার দেনা করে ১০ লাখ টাকা দালাল সুইটিকে পরিশোধ করেন। সেই অনুযায়ী গত ২৪ জানুয়ারি ডাংকিতে তুলে ইতালি পাঠাবে। ঔইদিন রাতে সুমনের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান পরদিন ডাংকিতে উঠে ইতালি রওয়ানা হবেন। কিন্তু এর পরদিন ২৯ জানুয়ারি লোক মারফত পরিবারের স্বজনরা খবর পায় লিবিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছেন। সে ইতালি যেতে পারেনি।

নিহত সুমনের স্ত্রী তানজিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামী দেশে রাইস মিল ব্যবসা করত। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে দালালের কথা অনুযায়ী ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে গত ১৯ জানুয়ারি লিবিয়া থেকে সমুদ্র পথে ডাংকি দিয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য রওনা দেন। কিন্তু ইতালি পৌঁচ্ছার আগেই রহস্যজনকভাবে আমার স্বামীর মৃত্যুর খবর পাই। এ খবর জানতে আমি দালাল সুইটির কাছে গেলে সে জানায় সুমন ইতালি পৌঁছে গেছে। এরপর ইতালিতে আমি আমার এক আত্মীয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ২৪ জানুয়ারি তারা কয়েকজন ডাংকিতে ইতালি পৌঁছেছেন কিন্ত সুমন লিবিয়ায় অসুস্থ হয়ে বা অন্য কোন কারণে মারা গেছেন। এখন আমি কি করব। আমার তিনটি সন্তান। ধার দেনা কিভাবে পরিশোধ করব, তার লাশ কিভাবে দেশে আসবে বুঝতে পারছি না। লিবিয়ার দালাল এখন আমার ফোন রিসিভ করছে না। তার ফোন বন্ধ পাচ্ছি।

এ বিষয়ে দালাল সুইটি বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার কাজ ছিল সুমনকে সেখানের দালাল দিয়ে ইতালি পাঠানো। কিন্ত জানতে পারলাম ডাংকি দেয়ার দিন সে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। তিনি বলেন, আমি জানতাম ২৪ জানুয়ানি সুমন ডাংকিতে ইতালি যাবে। পরে খবর পায় মৃত্যুর। এর জন্য আমি দায়ী না।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, অবৈধ পথে কেউ বিদেশে গিয়ে যদি মৃত্যুবরণ করে তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে থাকে প্রশাসন। অভিযোগ পেলে দালালদের শাস্তির আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবগত করা হয়।

ভৈরবের সুমনের মরদেহ দেশে আনতে নিহতের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(ঢাকা টাইমস/৩১জানুয়ারি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাকার দুই সিটিতে এবার বসছে ১৯টি কোরবানির পশুর হাট
সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর ২ সদস্য আটক
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে খালেদা জিয়া কখনো আপস করেননি: কাদের গনি চৌধুরী 
সুনামগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় শিশু নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা