বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল : নীরব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৪
অ- অ+

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপির দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনের ফসল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এবং যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব।

সোমবার বিকালে রাজধানীর মগবাজার মধুবাগ মাঠে হাতিরঝিল থানা বিএনপির এক কর্মিসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে কর্মশালায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে এটা বিএনপির ইচ্ছার বাইরে নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিএনপি তো আগেই ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সংস্কার অবশ্যই বিএনপি চায়।”

সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংস্কার যুগের পর যুগ চলতে থাকবে। নির্বাচিত সরকার এলেই দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে পরিপূর্ণভাবে সংস্কার হবে। দেশে পরিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাবে।”

“আমরা ১৬ বছর আন্দোলন করেছিএকটা দৃশ্যমান শত্রুর বিরুদ্ধে। এই দৃশ্যমান শত্রুটা শুধু যে বিএনপির শত্রু ছিল তা নয়, সারা জনগোষ্ঠীর একটা শত্রু ছিল।” বলেন নীরব।

তিনি বলেন, “সারাদেশে বিএনপি ও এর সব অঙ্গসংগঠন যে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আজ এতটা শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে তার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই। তার অবর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ সারা দেশের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ এবং সুসংগঠিত।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে “নীরব আরও বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে- আপনার পাশের লোকটি ভালো আছে কিনা! আপনি শুধু নিজে ভালো থাকলেই হবে না। আপনার পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব তারা ভালো আছে কিনা; সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের প্রত্যকটি নাগরিকের। কোনো প্রকার লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব করলে এবং দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় এমন কাজে জড়িয়ে পড়লে ছাড় দেওয়া হবে না“ বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সাইফুল আলম নীরব বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রয়েছেন, যার ফলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রকে চলমান রাখতে অবিলম্বে নির্বাচন প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ভোটের অধিকার। সেই অধিকার যত দ্রুত সম্ভব ফেরত দিতে পারবে।”

বিগত সরকারের দুর্নীতি নিয়ে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, “সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে এই দেশে। হাজার হাজার মানুষকে গুম খুন নিখোঁজ করা হয়েছে এই দেশে গণতন্ত্রের প্রত্যাশায়। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। নব্বইয়ে গণ অভ্যুত্থান হয়েছে। সর্বশেষ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান। ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যাশা মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছে একটি নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে। আমরাও সমর্থন দিয়েছি একটি নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে। কিন্তু জনগণ সেই নিরপেক্ষতা দেখতে পাচ্ছে না।”

গত ১৫ বছর ধরে কেউ ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে নীরব আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়েছে নিরপেক্ষভাবে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে। মানুষের চাওয়া একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।”

তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার আমাদের বহু ভাইকে গুম, খুন ও হত্যা করেছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আমাদের বহু ছাত্র ভাই এবং সাধারণ মানুষ ও বিএনপির বহু নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা করেছে। এরপরও এই আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হতে তিনি সকল নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানান।

“রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ও দেশের জনগণের চাহিদা মেটাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন হলে মানবিক বাংলাদেশ, স্বচ্ছ বাংলাদেশ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠিত হবে।” বলেন তিনি।

হাতিরঝিল থানা বিএনপি আহবায়ক নাজমুল হক মাসুমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমিনুল হক বক্তব্য রাখেন। মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, মহানগর বিএনপি সিনিয়র সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, যুগ্মআহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, আকতার হোসেন, আতাউর রহমান, হাজী মো. ইউসুফ,আফাজ উদ্দিন, মো. শাহআলম, মহানগর সদস্য মনিরুল আলম রাহিমী, ইব্রাহিম খলিল, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, এম এস আহমাদ আলী, কৃষকদলের মহানগর আহ্বায়ক আরশাদুল আরিস ডল, শ্রমিক দলের মহানগর আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম রাজা, জাসাস ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন এসময় উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/জেবি/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রোনালদোর ৯২৮তম গোল, ১০ জন নিয়েও জয় পেয়েছে আল নাসর
সংসদে যান সেখানেই হবে মূল সংস্কার, নাহিদকে  ফারুক
যশোরে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
ঈদ টার্গেট করে বিপুল জাল নোট তৈরি, ৪০ লাখ ছাড়ার পর পুলিশের হাতে ধরা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা