সিরাজগঞ্জে আমের মুকুলে সেজেছে প্রকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ
  প্রকাশিত : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৩| আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৭
অ- অ+

উত্তর জনপদের ইতিহাস সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ জেলা। জেলার প্রতিটি উপজেলার প্রতিটি এলাকার আম গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। শীত যেতে না যেতেই আমের মুকুল জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। বর্তমানে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত সিরাজগঞ্জের প্রতিটি এলাকা।

দূর সীমানা থেকে ভেসে আসছে কোকিলের কুহু কুহু কলতান। নানা ফুলের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছে আম গাছের মুকুল। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মুকুলের সেই সুমিষ্ট ঘ্রাণ মুগ্ধ করে তুলেছে মানুষের হৃদয়। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুণ গুণ শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।

সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি এলাকাজুড়ে এখন সর্বত্র গাছে গাছে শুধু আমের মুকুল আর মুকুল। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম যেন প্রতিটি আমগাছ। সেই সুবাদে মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। রঙিন বনফুলের সমারোহে প্রকৃতি যেমন সেজেছে বর্ণিল সাজে, তেমনি নতুন সাজে যেন সেজেছে সিরাজগঞ্জ জেলার আম বাগানগুলো। আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে সিরাজগঞ্জ জেলার সর্বত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো।

সিরাজগঞ্জ জেলায় আম্রপালি, ফজলি, খিরসা, ল্যাংড়া, রাজভোগ, বারি ফোর ও গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও ছোট ছোট পরিত্যক্ত এবং বাড়ির আশপাশের জায়গাগুলোতে অনেক গাছ রয়েছে। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আগামী ফাল্গুন মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ মুকুলে ছেয়ে যাবে প্রতিটি আমগাছ।

সিরাজগঞ্জের আমচাষিরা জানান, এখনো সব গাছে মুকুল আসেনি। কয়েক দিনের মধ্যেই সব গাছে মুকুল আসবে। প্রতি বছরই তারা আম বাগান থেকে অনেক টাকা আয় করে থাকেন।

জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষি অফিসার সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এবার উল্লাপাড়াতে ১৯৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। গাছে গাছে আমের মুকুল আসা শুরু করেছে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়।

তিনি আরও জানান, ফুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ হতে পারে। এ ব্যাপারে আমচাষিদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমের মুকুল ভালো রাখতে প্রাকৃতিক পরাগায়নের জন্য মৌমাছি পালন এবং বাগানের চারপাশে ফলদ গাছ রোপণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসাধরণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, জেলার এবার মোট ১৫৯৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬১, কামারখন্দ উপজেলায় ২৫৮, কাজিপুর উপজেলায় ২৪০, রায়গঞ্জ উপজেলায় ৮৭, তাড়াশ উপজেলায় ১৫৪, উল্লাপাড়া উপজেলায় ১৯৪, বেলকুচি উপজেলায় ২১৫, চৌহালি উপজেলায় ২৬ ও শাহজাদপুর উপজেলায় ২৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এবার আমের মুকুল আগাম ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় উকুন নামক এডো মেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোভেজ বালাই নামক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত বছর আমের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হয়েছিলেন আমচাষিরা। গত বছরের চেয়ে এ বছর আম বাগান বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জেলার বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। তবে বাণিজ্যিকভাবে এখনো আম চাষ শুরু হয়নি এ জেলায়।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।

(ঢাকা টাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ব্যাপক নিরাপত্তায় ফিরোজায় পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন ড. তৌহিদুল আলম
খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশে স্বাগতম: সারজিস আলম
ময়মনসিংহে একযোগে ৬ থানার ওসিকে বদলি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা