মিয়ানমারে যুদ্ধপরিস্থিতিতে অশান্ত উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফ সীমান্ত
সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যকার যুদ্ধে আতঙ্ক-ভয় আর উৎকণ্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটছে এপারে উখিয়া, নাইক্ষংছড়ি ও টেকনাফের মানুষের। সীমান্তের ওপার থেকে ভেসে আসছে গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে ঘরবাড়ি।
গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তের ওপারে টানা যুদ্ধপরিস্থিতি। এর মধ্যে প্রাণ নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে মিয়ানমারের বিভিন্ন জাতি-উপজাতির মানুষ।
মিয়ানমার সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘাত পরিস্থিতিতে মুসলিম রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি রাখাইন চাকমা ও তঞ্চ্যঙ্গা জাতির ৫৬ জন নারী-পুরুষ অনুপ্রবেশ করছে। সশস্ত্র বিদ্রোহীদের গোলাগুলির কারণে প্রাণ বাঁচাতে বাইশারী ও ঘুমধুমের স্থলপথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে তারা। বর্তমানে তারা রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) যারিন তাসনীম সরেজমিন পরিদর্শন করে গণমাধ্যমকে জানান, রাখাইন থেকে মগ ও চাকমা উপজাতির ৫৬ জনের একটি দল উখিয়ায় আশ্রয় শিবিরে এসে পৌঁছেছে। তাদের খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যকার চলমান সংঘর্ষে শান্তিতে বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই। উপায়ন্তর না দেখে মুসলিম, চাকমা, হিন্দু ও রাখাইন তঞ্চ্যঙ্গা নৃগোষ্ঠীরা প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে আসছে বাংলাদেশে।
গত ৩ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উখিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আসছে মিয়ানমারের নাগরিকরা।
উখিয়া, নাইক্ষংছড়ি ও টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশ থেকে ভেসে আসছে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় বাসিন্দাদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যায় বিস্ফোরণের শব্দে। একটা ভীতির মধ্যে দিন কাটছে তাদের।
বুধবার দুপুর থেকে টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা হোয়াইক্ষং, উঞ্চিপ্রাঙ্ক, নাইক্ষংছড়ির ঘুমধুম, বাইশারী তুমব্রুসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গোলাগুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে ছিল।
পালংখালীর চেয়ারম্যান এম গফুর চৌধুরী জানান, ওপারে সংঘাতের কারণে সীমান্তের কাছে না যেতে বারন করা হয়েছে এলাকাবাসীকে। তিন মাস ধরে যুদ্ধপরিস্থিতিতে এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার পরিবার দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে।
সাবরাং ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শরিফ বলেন বলেন, মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
ওপারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে বলে জানান হ্নীলার ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। সীমান্তের লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পরিবারকে।
এরই মধ্যে নতুন করে ঘুমধুম বাইশারী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা পরিবারের ৬৫ সদস্য অনুপ্রবেশ করে।
(ঢাকাটাইমস/২২নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন