রেললাইন ঘেঁষে বহুতল ভবন, ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা

মো. জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
  প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:৩১| আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:০২
অ- অ+

নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইন ঘেঁষে নির্মাণ করা হচ্ছে দোতলা ভবন। ভবনটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন হওয়াসহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীরা। আরসিসি পিলার দিয়ে প্রকাশ্যে এই নির্মাণকাজ চললেও নির্বিকার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

শহরের অত্যাধুনিক সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের সামনে সৈয়দপুর-পার্বতীপুর রুটের রেললাইনের পাশে রেলওয়ের জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে ওই ভবনটি। এখানে লাহোর টেইলার্স নামের টিনশেড দোকান ছিল। সেটি ৩৫ লাখ টাকায় কিনে নিয়ে আরসিসি পিলার দিয়ে দোতলা ভবন করছেন সাজু ইলেকট্রিকের মালিক।

স্থানীয় একটি সূত্রমতে, ইতোমধ্যে এই দোকানটি ৫ লাখ টাকা জামানত ও মাসিক ২২ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছে নান্না বিরিয়ানি নামে এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী। দিন-রাত কাজ করা হচ্ছে ভবনের। রেলওয়ের জায়গায় এবং রেললাইন ঘেঁষে আগের চেয়েও দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ভিত্তি তোলা হয়েছে। কিন্তু নির্বিকার সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ভূসম্পত্তি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডাব্লিউ)।

এ ব্যাপারে ভবন নির্মাণকারী সাজু মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, দোকানটি কিনে নিয়ে যথারীতি রেলওয়ের পাকশি এস্টেট অফিস থেকে নিজ নামে বরাদ্দ লাইসেন্স নিয়েছি। তাই ভবন নির্মাণ করছি। স্থানীয় রেলওয়ের সবাই জানে। ভবন নির্মাণ অবৈধ হলে তো কর্তৃপক্ষ বাধা দিত। খবর নিয়ে দেখেন রেলওয়ের উপরের মহলে আমার কী যোগাযোগ। সৈয়দপুরে রেলওয়ের কারো সাহস নাই আমার কাজ আটকাবে।’ তার এক আত্মীয় পুলিশ সুপার বলেও জানান তিনি।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের জায়গায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ হলে তা দেখার দায়িত্ব মূলত পাকশীর রেলওয়ে এস্টেট ডিপার্টমেন্টের এবং স্থানীয় এইএন, আইওডাব্লিউ বিভাগের। তারা অবৈধ কাজ বন্ধ করতে প্রয়োজন হলে আমাদের সহযোগিতা নিতে পারে। তাহলে আমরা তাদের সাথে যাব। নয়তো আমাদের করার কিছু নেই।’

এই ভবন নির্মাণের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান সৈয়দপুর রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ তথা ওপেন লাইন কর্তৃপক্ষ পিডাব্লিউ অফিসের কর্মকর্তা সুলতান মৃধা। তিনি বলেন, ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী অবৈধ দোকানপাট নিয়মিত অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করা হয়। বিশেষ করে সিগন্যাল দেখতে বিঘ্ন ঘটানো অবকাঠামো কোনোভাবেই রাখা হয় না। তারপরও নির্ধারিত সীমানার মধ্যে এসে অনেকেই স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করে। খবর পেলে আমরা ব্যবস্থা নিই। কিন্তু উল্লেখিত ভবন বা দোকান নির্মাণ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’

রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগের সৈয়দপুরে দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডাব্লিউ) শরিফুল ইসলাম বলেন, দোকানটি নির্মাণের খবর পেয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও কাজ চলছে। লোকবলের অভাবে এই অবৈধ কাজ বন্ধ করতে পারছি না। উপর মহলে জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় নির্দেশ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তার আগে আমাদের আর কিছুই করার নাই।’

এ বিষয়ে কথা বলতে রেলওয়ে (পশ্চিম) রাজশাহী অঞ্চলের জিএম মামুনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ভবনটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে দক্ষিণ দিকের আউটার সিগন্যাল দেখার ক্ষেত্রে ট্রেন চালকদের সমস্যা হবে। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ের ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেন এলাকার দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ফেসবুককে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
তরুণ প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম :আমিনুল হক 
গণতন্ত্রের লড়াই এখনো শেষ হয়ে যায়নি: মজনু 
বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে ৩০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা