যন্ত্র দিয়ে ইউরিয়া সার প্রয়োগে ঝুঁকছেন চাষিরা, সাশ্রয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:০৬
অ- অ+

প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় সারের ৪০ শতাংশ সাশ্রয়, কার্যকারিতা ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি এবং পরিবেশে নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন কম, সাথে উৎপাদনও বৃদ্ধি। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এমন উদ্ভাবিত ব্রি দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্র দেশের কৃষিখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার হাতছানি।

এরই মধ্যে পরীক্ষামূলক জরিপে সফলতার মুখও দেখেছেন দক্ষিণের জেলা মাদারীপুরের কৃষকরা। ফলে আগামী দিনে ধান চাষের উর্বর দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে এ প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুরের কুমেরপাড় এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম এবার চার বিঘা জমিতে রোপা আমন আবাদ করেছেন। তবে প্রচলিত পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করেননি তিনি। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত ‘ব্রি দানাদার ইউরিয়া সার প্রয়োগযন্ত্রের মাধ্যমে সার দিয়েছেন। ফলে অন্য বছরের চেয়ে এবার ফলন হয়েছে বেশি, খচরও কমেছে।

ওই এলাকার অন্তত ২০ জন চাষি এবার এই যন্ত্রের মাধ্যমে সার দিয়েছেন জমিতে। এতে সন্তুষ্ট চাষিরা। আগামী দিনেও এভাবেই সার প্রয়োগ করবেন তারা। তবে এ যন্ত্রটির দাম আর কমানোর দাবি করছেন তারা।

এবার ধান বেশি পেয়েছেন জানিয়ে চাষি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আগের চেয়ে এবার সারও কম লেগেছে। হাতে সার ছিটানো অনেক কষ্টের। যন্ত্রের মাধ্যমে সার দিলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। তাই আগামীতে এই যন্ত্রের সহযোগিতায় সার ছিটাব।’

এ যন্ত্রের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের সফলতা-ব্যর্থতা খতিয়ে দেখতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ইনস্টিটিউটের প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা দেছে, এক বিঘা জমিতে প্রচলিত পদ্ধতিতে ধান উৎপাদন হয় ১৩ মণ, সেখানে এ পদ্ধতিতে উৎপাদন ১৭ মণ। বিঘা প্রতি আগে সার লাগত ২৪ কেজি, সেখানে এ পদ্ধতিতে লাগে ১৬ কেজি।’ আগামী দিনে চাষিরা এ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকবেন বলে আশা করেন তিনি।

ড. মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন আরও বলেন, প্রয়োগযন্ত্রটি মাটির ৭ থেকে ৮ সেন্টিমিটার গভীরে সরাসরি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে সক্ষম বলে সারের প্রায় ৪০ শতাংশ সাশ্রয় করে। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আয় বৃদ্ধি ও টেকসই কৃষি চর্চার উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি, নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলাতেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

এনসিসি ব্যাংকের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) কর্মসূচির আওতায় দেশের চারটি কৃষি পরিবেশ অঞ্চলে যন্ত্রটির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য গবেষণা চলছে বলে জানান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে মাঠ জরিপে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছি। তাই কৃষকদের সহযোগিতার মাধ্যমে যন্ত্রটি সারা দেশে প্রচলন করা হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩ডিসেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক ও সাবেক এমপি সাদেক রিমান্ডে
ঢাবি এলাকায় গাছ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ভার্টিগো: কতটা ভয়ানক এ রোগ? চিকিৎসাই বা কী
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ইউএনএইচসিআর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা