রেজিস্ট্রার অফিসের নকলনবিশ অ্যাসোসিয়েশন
চট্টগ্রামে সদর ইউনিট নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীদের পক্ষ নেয়ার অভিযোগ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে

আওয়ামী শাসনামলে প্রায় দুই যুগ নির্বাচন করতে পারেনি সরকারি নিবন্ধিত সংগঠন নকল নবিস অ্যাসোসিয়েশন। দীর্ঘ ২৩ বছর পর আগামী ১৯ জুলাই বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার (নকল নবিস) অ্যাসোসিয়েশন সদর ইউনিটের ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন নির্ধারিত রয়েছে।
কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এ নির্বাচন ঘিরে নকল নবিশদের মধ্যে উৎসবের পাশাপাশি আতঙ্ক ও আশঙ্কা বিরাজ করছে বলে একাধিক নকলনবিশ জানান। ফ্যাসিবাদ ও নিষিদ্ধ আওয়ামী রেজিমকে বৈধভাবে পরিষদের দায়িত্ব অর্পণের নীলনকশা প্রণয়নের অভিযোগ উঠেছে জেলা রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে।
তবে জেলা রেজিস্ট্রার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছে। যারা তার কাছে যাচ্ছেন, সতর্ক করে দিচ্ছেন গণ্ডগোল হলে এখানে কোনো নির্বাচন করতে পারবে না।
সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন তিন নকলনবিশকে নির্বাচিত করতে গোপনে নানা তৎপরতায় লিপ্ত জেলা রেজিস্ট্রারÑ এমন অভিযোগ সদর ইউনিট সংশ্লিষ্টদের। এই তিনজনের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনকে সভাপতি, কামরুল ইসলামকে সাধারণত সম্পাদক ও সমীর দত্তকে অর্থ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করতে আওয়ামী রেজিম ও রেজিস্ট্রার মরিয়া বলে অভিযোগ।
সাধারণ নকলনবিশরা অভিযোগ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় সদর অফিসকে নিজেদের কবজায় রেখে এমন কোনো অপকর্ম নেই যা ওই তিন প্রার্থী ও তাদের সিন্ডিকেট করেনি। আওয়ামী রেজিমের তিনজনকে প্রার্থী দিয়ে সরকার ও আন্দেলনকে কলুষিত করেছেন জেলা রেজিস্ট্রার। অভিযুক্ত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা চট্টগ্রাম মহানগর শাখায় এক ব্যক্তি অভিযোগ জমা দিয়েছেন, যার স্মারক নং ৭২ (৫২০)।
তাতে অভিযোগকারী উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা বিগত সরকারের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত এবং বিগত দিনগুলোতে ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে সদর অফিসে নানা অনিয়ম-দুনীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত।
গোয়েন্দা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগটি উচ্চপর্যায় থেকে তদন্তাধীন রয়েছে!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নকলনবিশ জানান, ওই তিনজন মূলত পলাতক আওয়ামী লীগের গত সরকারের আমলের জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আর তাদের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিচ্ছেন জেলা রেজিস্ট্রার!
নির্বাচনে বির্তকিতদের পক্ষে অবস্থান নেওয়াসহ সার্বিক বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে জেলা রেজিস্ট্রার জামিলুর রহমান বলেন, নকলনবিশ অ্যাসোসিয়েশন একটা বেসরকারি সংগঠন। এর সদস্যরা দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন।
তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমি নির্বাচনের কারও পক্ষে নিয়েছি তা সঠিক নয়। হয়তো কেউ আমার বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে ওরা আমার কাছে আসছে নির্বাচনের কথা বলতে, আমি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি কোনো ধরনের গণ্ডগোল হলে এখানে কোনো নির্বাচন করতে পারবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাপারটা আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’
তবে সদর অফিস সংশ্লিষ্টদের প্রত্যশা, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও ফ্যসিবাদমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে সদর অফিসের নকলনবিশরা নতুন নেতৃত্ব ফিরে পাবেন।
(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/মোআ)

মন্তব্য করুন