হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অনুমোদনে বৈঠকে বসবে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা, যা আছে চুক্তিতে
লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অনুমোদন নিয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা বৈঠক করবে।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে। এতে লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে। বিনিময়ে হিজবুল্লাহ আন্তর্জাতিক সীমান্তের প্রায় ৩০ কিমি (১৮ মাইল) উত্তরে লিটানি নদীর দক্ষিণে তার উপস্থিতি শেষ করবে এবং লেবাননের সেনাদের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কাছাকাছি পৌঁছার মধ্যেই ভয়ঙ্কর লড়াই অব্যাহত রয়েছে। লেবাননের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়েছে এবং হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট হামলা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন>> লেবাননে ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩১, গাজায় হত্যা ১১ জনকে
ইসরায়েলের পত্রিকা হারেটজের মতে, মঙ্গলবারের বৈঠকে মন্ত্রীরা এই চুক্তিতে ভোট দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রয়টার্স ইসরায়েলের একজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, চুক্তি অনুমোদনের উদ্দেশ্যে বৈঠকটি হবে।
বার্তা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, লেবাননের চারটি জ্যেষ্ঠ সূত্রের খবর অনুযায়ী লেবাননের দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ অনুসারে, সম্ভাব্য চুক্তির মধ্যে রয়েছে- পারস্পরিক যুদ্ধবিরতি, লেবাননে আইডিএফের উপস্থিতি ৬০ দিন পর্যন্ত হবে, আইডিএফ প্রত্যাহার করার সঙ্গে সঙ্গে লেবাননের সেনাবাহিনী প্রতিস্থাপন করবে, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েল অধিকৃত কোনো বাফার জোন থাকবে না, যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত পাঁচ দেশের কমিটির নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র, লেবাননের সরকার দেশটিতে অস্ত্র ক্রয় ও উৎপাদন তদারকি করবে।
এছাড়াও, হিজবুল্লাহ চুক্তি লঙ্ঘন করছে বলে মনে করা হলে লেবাননে আক্রমণ করার ইসরায়েলের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একটি চিঠি দেবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘নীতিগতভাবে’ চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে। লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ইলিয়াস বো সাব রয়টার্সকে বলেছেন, নেতানিয়াহু তার মন পরিবর্তন না করলে যুদ্ধবিরতিতে এখন ‘কোনো গুরুতর বাধা’ নেই।
ফরাসি প্রেসিডেন্সি সোমবার সন্ধ্যায় বলেছে যে আলোচনা ‘উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রসর’ হয়েছে এবং ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহকে ‘দ্রুত এই সুযোগটি কাজে লাগাতে’ আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে আমরা কাছাকাছি আছি।”
তবে “আমরা এখনো সেখানে নেই”- যোগ করেন তিনি।
কিন্তু ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির যুদ্ধবিরতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।”
লেবাননের কর্তৃপক্ষ বলেছে, কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলিউশন ১৭০১ এর শর্তে সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত, যা হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
রেজুলিউশনে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক সীমান্ত ব্লু লাইন এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সীমানা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার (১৮ মাইল) লিতানি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও অস্ত্র প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে চুক্তিতে।
ইসরায়েল বলছে, এটিকে কখনই পুরোপুরি সম্মান করা হয়নি, অন্যদিকে লেবানন বলেছে যে ইসরায়েলি লঙ্ঘনের মধ্যে লেবাননের ভূখণ্ডের উপর সামরিক ফ্লাইট অন্তর্ভুক্ত ছিল।
(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এফএ)
মন্তব্য করুন