ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্কারোপে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে ৪ লাখ মার্কিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:১২| আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৭:২৫
অ- অ+

যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত আমদানি শুল্ক আরোপের ফলে প্রায় ৪ লাখ মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে বলে সতর্ক করেছে মেক্সিকো।

গত ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লোদিয়া শেইনবাউম এবং অর্থমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

শেইনবাউম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরোপ করে, তাহলে মেক্সিকোও পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই চীন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তারই জবাবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী এব্রার্ড বলেছেন, নতুন এই শুল্কযুদ্ধ মার্কিন কর্মীদের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলবে। মেক্সিকোতে উৎপাদিত গাড়ি নির্মাতাদের পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪ লাখ মানুষ চাকরি হারাবে।

শুধু কর্মসংস্থানই নয়, ভোক্তাদের ওপরও এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব পড়বে বলে মেক্সিকান অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ পিকআপ, ট্রাক মেক্সিকোতে তৈরি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপ করা হলে প্রতিটি গাড়ির দাম তিন হাজার ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ‘নিজের পাঁয়ে কুড়াল মারার মতো অবস্থা হবে’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ নভেম্বর ট্রাম্প বলেছেন, হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি তিন দেশের পণ্যের ওপর শুল্কারোপ করবেন। অবৈধ অভিবাসন এবং মাদক পাচার রোধে ব্যর্থতার জন্য তিনি এমন পদক্ষেপ নিবেন বলে জানিয়েছেন। তার দাবি এর ফলে মার্কিন উৎপাদন শিল্প আরো শক্তিশালী হবে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান বন্ধে ব্যর্থতার জন্যও প্রতিবেশী দুই দেশ ও চীনকে আচ্ছামতো তুলোধুনা করেছেন ট্রাম্প।

একই দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিকৃত সকল পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের নির্বাহী আদেশে সই করার পাশাপাশি যতক্ষণ না পর্যন্ত বেইজিং ফেনটানিল মাদক চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত চীনের ওপর আরও অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক দেশ। মার্কিনীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় ৪০ শতাংশ পণ্যই আমদানি করে চীন, কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে। আমদানিকৃত পণ্যের দাম বছরে দাঁড়ায় ৩ হাজার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ট্রাম্প কিন্তু নির্বাচনি প্রচারণায় বহুবার চীনের বিরুদ্ধে কঠোর শুল্কারোপের কথা উচ্চারণ করেছেন। এই কারণে চীনের ওপর শুল্কারোপের হুমকিতে নতুন করে তেমন কোনো বিস্ময় ছিল না। তবে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর হঠাৎ করে শুল্কারোপের ট্রাম্পের ঘোষণায় অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এর কারণ হচ্ছে সীমান্তবর্তী দেশ দুটিকে যুক্তরাষ্ট্র যুগ যুগ ধরে নিজেদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।

রাজনীতিবিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, শুধু বাণিজ্যিক কারণেই নয়, রাজনীতি ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও অটোয়া ও মেক্সিকো সিটি আমেরিকার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তাই ঘনিষ্ঠ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হঠাৎ করে শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লোদিয়া শেইনবাউম জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

অপরদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যে ট্রাম্পের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের দীর্ঘ দিনের সম্পর্কেও ওপর গুরত্বারোপ করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঢাবি এলাকায় গাছ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ভার্টিগো: কতটা ভয়ানক এ রোগ? চিকিৎসাই বা কী
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ইউএনএইচসিআর
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার সিএসএএ ফেলোশিপ অর্জন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা