সিভিল সার্ভিসে ‘ক্যাডার’ শব্দ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে: জনপ্রশাসন সচিব
সিভিল সার্ভিসে ‘ক্যাডার’ শব্দটি নেতিবাচক মনে করা হয়, সংস্কার প্রস্তাবে তা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান। বলেন, সিভিল সার্ভিস থেকে ক্যাডার শব্দটি বাদ দিলে অনেকের মানসিক শান্তি আসবে।
রবিবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘প্রশাসন নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ। বিশেষ করে বিসিএস, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এটাকে নানান কারণে এখন মনে করা হয় ক্যাডার। এই ক্যাডার শব্দটির সাথে নেগেটিভি থাকে। এজন্য জনপ্রশাসনের সংস্কার কমিশন অনেকগুলো সংস্কারের প্রস্তাব দেবো। এরমধ্যে একটা থাকবে যে এই ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে, যার যে সার্ভিস যেমন সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল সার্ভিস হেলথ, সিভিল সার্ভিস এগ্রিকালচার এরকম। এটা আমাদের বড় সংস্কার। এতে আমরা মনে করি অনেকের মানসিক শান্তি আসবে। এটা করা দরকার।’
ডিসি শব্দটি নিয়েও অনেকের আপত্তি আছে সেখানে পরিবর্তন হবে কিনা- জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, এরকম আমরা অনেক জায়গায় পেয়েছি, যেমন জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কিনা, জেলা প্রশাসক ব্রিটিশতের সৃষ্টি। এই শব্দের বাইরে আরো অনেক শব্দ আছে যেমন কালেক্টর, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আছে এসব বিষয়ে সাধারণ মানুষ জানতে চায়। আমরা এ সব নিয়ে সুপারিশ দেবো। তবে সরকার সেটাই নেবে যেটা দেশের জনগণ চায়।
শুধু শব্দ পরিবর্তন করে কি কোনো পরিবর্তন হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব বলেন, আসলে মানুষের মন ও মস্তিষ্কের পরিবর্তন করতে হবে। এই দুই জায়গার পরিবর্তনটা আগে করতে হবে। সামনে আরো পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্যুর করতে গিয়ে দেখলাম মানুষ মনের থেকে যে কথাগুলো বলেছে এবং কয়েকটি অফিস সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা রয়েছে। সে বিষয়ে আপনারাও জানেন। এগুলো আমি উল্লেখ করতে চাই না। তবুও দুই-একটা বলতে হয় যেমন এসিল্যান্ড, রেজিস্ট্রেশন অফিস সম্পর্কে মানুষের বাজে ধারণা। এখানে দুর্নীতি এমন লেবেলের যে সেখানে কোনো অভিযোগ নেই। সবাই সেখানে দিয়ে যাচ্ছে। দিচ্ছে, নিচ্ছে এবং এটাও বলে আগের স্যারের থেকে কম নিচ্ছেন। দুর্নীতির এ ধরনের একটা প্রেক্ষাপট আমাদের জিইয়ে রেখেছে।
মাঠ পর্যায়ের পরিদর্শনে তাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে জানিয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা যখন গোপালগঞ্জের পাশ দিয়ে যাই সেখানে ৫০০ বেডের একটা বিরাট মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করা হয়েছে। এতে আমরা খুশি যে একটা কাঠামো তৈরি হয়েছে।
কিন্তু সেখানে কোনো ডাক্তার নেই, ছাত্র, নার্স নেই। এ ধরনের বিল্ডিং যদি মানুষ ছাড়া পড়ে থাকে সেসব নিয়ে আমাদের অবজারভেশন আছে। এসব বিষয় আমাদের সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে সুপারিশ আসবে, জানান সিনিয়র সচিব।
তিনি বলেন, আমাদের আরো কিছু ভিজিট বাকি আছে। যেমন প্রেসক্লাবে একটা আয়োজন করা হবে সেখানে আমরা আপনাদের কথা শুনবো। এফবিসিসিআইও আমাদের একটা ডেট দিবে আমরা যাবো এবং তাদের কথা শুনব। এটাই আমাদের কাজ, অনেক কাজ গুছিয়ে আনা হয়েছে, এছাড়া অনলাইনে এক লাখ প্রশ্ন গেছে, সেগুলোর উত্তর সফটওয়্যারের মাধ্যমে দিতে পারবো।
মানুষ পরিবর্তন চায়, পরিবর্তনের জন্যই পরিবর্তিত সরকার এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কাজ করছি। আমাদের দোষটা কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদেরই বেশি। আমরা শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বলছি, আমরাইতো টিকিয়ে দিয়েছিলাম সরকার। আমি হয় তো ছিলাম না, কিন্তু আমাদের মতো কর্মকর্তারাইতো টিকিয়ে রেখেছেন। তখন তাদের এক সুর আর ৫ আগস্টের পর আরেক সুর৷ এতে আপনারাও ভুক্তভোগী তখন আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন নাই।
(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/আরএইচ/এমআর)
মন্তব্য করুন