আওয়ামী লীগের দেড় যুগে সরকারি ব্যয়ের ৪০ শতাংশ লুটপাট: শ্বেতপত্র প্রকাশ

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:১৫| আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:৩৬
অ- অ+

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দেড় যুগের শাসনামলে সরকারি ব্যয়ের ৪০ শতাংশই লুটপাট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘চোর ধরা শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির কাজ নয়। আমাদের কাজ চুরির প্রক্রিয়া বর্ণনা করা। শ্বেতপত্রে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দোষ খোঁজা নয়, দুর্নীতির পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি।’

সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে শ্বেতপত্রের চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির পর্যবেক্ষণে আওয়ামী লীগ শাসনামলের বিগত ১৫ বছরে রাজস্ব ফাঁকি ও আর্থিক ক্ষতি, সরকারি বিনিয়োগ, খাদ্যপণ্যের সরবরাহ চেইন ধ্বংস, ব্যাংক খাতের লুটপাট, শ্রম অভিবাসন, সামাজিক সুরক্ষা নেট, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রকল্পে প্রশ্নবিদ্ধ অর্থ ব্যয়সহ জিডিপি-মূল্যস্ফীতির তথ্যে নয়-ছয় তুলে ধরা হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড়যুগের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাটের তথ্য শ্বেতপত্রে তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, ‘অর্থনৈতিক কাঠামো ঠিক না হলে সংস্কার উদ্যোগ ভেঙে যাবে।’

শ্বেতপত্র কমিটি ৯০ দিনে ১৮ বার সভা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ২২ বার সভা করেছি। ১২ জন নামজাদা অর্থনীতিবিদ নিয়ে শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করা হয়েছিল। একটি প্রতিনিধিত্বশীল কমিটির মাধ্যমে এই শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে।’

‘শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিটি সদস্য বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেছেন। বিদেশি পরামর্শক এনে এটি করা হলে অন্তত ২৫ কোটি টাকা খরচ হতো। দেশের জন্য নিঃস্বার্থ অবদান হিসেবে কমিটি এই কাজ করেছে।’

দেবপ্রিয় বলেন, ‘শ্বেতপত্রের পুরো প্রক্রিয়া না বুঝলে এই দলিলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই জনমানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বজায় রেখে শ্বেতপত্র প্রস্তুত হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে এটি ছাপার অক্ষরে প্রকাশ হবে।’

রিপোর্টের গ্রন্থস্বত্ব স্বয়ং বাংলাদেশ সরকারের জানিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, এরইমধ্যে সরকার এই রিপোর্টকে নিজস্ব দলিল হিসাবে স্বীকার করে নিয়েছে।

এর আগে রবিবার (১ ডিসেম্বর) শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়। এসময় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা শ্বেতপত্রকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে অভিহিত করেন। বলেন, একটি ঐতিহাসিক দলিল। বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে দুরবস্থা চলে আসছে, এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা উন্মোচিত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওই মাসের ২৮ তারিখ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করেন। এই কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।

(ঢাকাটাইমস/০২ডিসেম্বর/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বাংলাদেশে বড় বিনিয়োগে আগ্রহী বিশ্বের দুই বৃহত্তম বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান
সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: তারেক রহমান
সাইবার আইনে মামলা করলেন সারজিস আলম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা: চবির ৭৩ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা