সেনাবাহিনী দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে: সেনাপ্রধান
অফিসারদের নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা, আনুগত্য, ন্যায়পরায়ণতা ও কর্তব্যের প্রতি উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৮৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি ও ৫৯তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, “মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য একটি দক্ষ, আধুনিক এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সেনাবাহিনীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের দায়িত্ব মূলত অফিসারদের ওপরই বর্তায়। এই লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। কালক্রমে এই একাডেমি সুনামের সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করে এবং আজকে এটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মিলিটারি একাডেমিতে পরিণত হয়েছে। এই একাডেমি থেকে কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের নেতৃত্বে শৃঙ্খলা, আনুগত্য, ন্যায়পরাণতা ও কর্তব্যের প্রতি উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে বহির্বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে।”
এসময় ক্যাডেট অফিসারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আজকের দিনটা আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত আনেন্দের । দীর্ঘ তিন বছরের কঠোর পরিশ্রম শেষে আজকে তোমরা সেনাবাহিনীতে কমিশন পেতে যাচ্ছ। এজন্য সবাইকে অভিনন্দন।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নিদের্শনা দেন সেনাপ্রধান। বলেন, “তোমাদের কাছে আমার প্রত্যাশা সকলে সততা, সত্যবাদিতা, কর্তব্য, নিষ্ঠা ও কঠোর পরিশ্রম দ্বারা সেনাবাহিনীর ওপর অর্পিত সব দায়িত্ব তোমরা আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করবে। তোমাদের যেকোনো চ্যালেঞ্জ যেকোনো সময় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। সাময়িক চেতনার মূল্যবোধকে সর্বোচ্চ সমুন্নত রাখতে ও যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সাহসিকতার সঙ্গে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।”
এদিন সকালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান সেনাপ্রধান। শুরুতেই তিনি নবীন ক্যাডেটদের অভিবাদন গ্রহণ করে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। এরপর পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের হাতে স্মারক তুলে দেন তিনি।
এবার সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠ কৃতিত্বের জন্য সোর্ড অব অনার অর্জন করেন ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার আব্দুল্লাহ আল আরাফাত।
এদিন দীর্ঘ তিন বছরের কঠোর সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে এই মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ৮৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সর্বমোট ২১৩ জন অফিসার ক্যাডেট এবং ৫৯তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের ১৪ জন অফিসার ক্যাডেট ও চারজন ট্রেইনি অফিসার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের মধ্যে ২০৭ জন পুরুষ ও ২৪ জন নারী অফিসার রয়েছেন।
প্রধান অতিথি বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে তাকে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্ট অভ্যর্থনা জানান।
অনুষ্ঠানে বন্ধুপ্রতিম দেশ শ্রীলঙ্কান মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্ট, দেশি-বিদেশি উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের মা-বাবা ও অভিভাবক এবং গণমাধ্যম কর্মীরা বর্ণাঢ্য এ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।
(ঢাকাটাইমস/০৩ডিসেম্বর/এলএম/এফএ)
মন্তব্য করুন