২ মার্চ ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে সবাই গৌরবান্বিত হবে: মঈন খান
২ মার্চ ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বলেন, ‘এতে শুধু আ স ম আব্দুর রব নয়, দেশের প্রতিটি মানুষই গৌরবান্বিত হবেন।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২ মার্চ পতাকা দিবস ঘোষণার দাবিতে প্রতিবাদী সমাবেশে তিনি একথা বলেন। ‘হৃদয়ে পতাকা ২ মার্চ’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন সমাবেশের আয়োজন করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মঈন খান বলেন, ‘অতীত সরকার যদি সঠিক ইতিহাস নির্ধারণ না করে থাকে তাহলে আপনারা সঠিক ইতিহাস নির্ধারণ করুন। তারই ধারাবাহিকতায় যথাযথ মর্যাদা স্বীকৃত দিয়ে ২ মার্চ জাতীয় পতাকা দিবস পালন করুন।’
‘অবাক লাগে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আমাদের কেন জাতীয় পতাকা দিবসের ঘোষণার দাবি জানাতে আলোচনা করতে হবে। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ কলাভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন আ স ম আব্দুর রব। ওই দিন পূর্ব পাকিস্তানের গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতিবাদ মুখে তৎকালীন সংসদ অধিবেশন বাতিল হয়েছিল।’
মঈন খান বলেন, ‘সেদিনের পতাকা শুধু লাল-সবুজের পতাকা ছিল না, কেন্দ্র ছিল সোনালী বাংলাদেশ। তখনও কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা হয়নি। ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, স্বাধীনতার ঘোষণার আগেই স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলন হয়েছিল। এটা একটা ইউনিক। সেদিন হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমেছিল। গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেয়ে আলাদা ছিল না।’
‘সেদিন আ স ম আবদুর রবের সঙ্গে ছিলেন শাহজাহান সিরাজ, নুরে আলম সিদ্দিকী, আব্দুস কুদ্দুস পাটোয়ারী। স্বাধীনতার ইতিহাস তাদেরকে আমরা কতটুকু সম্মান জানাতে পেরেছি?’
বিএনপির এই অন্যতম সিনিয়র নেতা বলেন, ‘১৯৪৮ সালে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই উচ্চারণের মধ্যে স্বাধীনতার বীজ বপন করেছিল ছাত্ররা। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন দেখেছি, ১৯৬২ সালে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন দেখেছি। সেদিন হামিদুর রহমানের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ঢাকার রাজপথে হাজার হাজার ছাত্র আন্দোলন করেছিল।’
‘সেদিন ছাত্ররা বলেছিল এই শিক্ষানীতি ছিল ধনিক শ্রেণির জন্য, পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নয়। এরপর ৬৯'র এবং ’৭১ সালে ছাত্র বিদ্রোহের ইতিহাস। লাখ লাখ মানুষের বুকের রক্তের ওপর দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ একটাই কথা বলেছিল আমরা গণতন্ত্র চাই।’
সেই ধারাবাহিকতায় বিগত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ আন্দোলন করেছে মন্তব্য করেন মঈন খান। বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এসব ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা।’
‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্ররা যে ভূমিকা পালন করেছে তা অবিস্মরণীয়। এটা বিশ্ব ইতিহাসের অংশ হিসেবে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আজকে নতুন করে লাল-সবুজের পতাকা থেকে তরুণ ছাত্রদের শিক্ষা নিতে হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহানা সুলতানার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিসেস তানিয়া রব, আয়োজক সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এস এম সামসুল আলম নিক্সন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
শাহানা সুলতানা বলেন, ‘বাংলাদেশের শুরু হয় ২ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে। আমাদের কেন জাতীয় পতাকা দিবস চাইতে হবে? এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর। আজকের এদিন থেকে আমরা যাত্রা শুরু করলাম।’
২ মার্চ জাতীয় পতাকা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে সমাবেশে জানানো হয়।
(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/জেবি/ডিএম)
মন্তব্য করুন