পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়লো
মাত্র কয়েকদিন আগে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের অবসরের বয়স বাড়ানোর পর এবার চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল শুক্রবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে ৩৬ বছর বয়স পর্যন্ত গ্রুপ ‘এ’ (১ম শ্রেণি) পরীক্ষায় আবেদন করা যাবে৷ গ্রুপ ‘বি’ (২য় শ্রেণি) পদে সর্বোচ্চ বয়স করা হয়েছে ৩৯ বছর। অর্থাৎ সাধারণ শ্রেণিভুক্ত ছেলেমেয়েরা এখন থেকে ৩৬ বছর বয়সেও ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় বসতে পারবেন৷ ডব্লিউবিপিএস পরীক্ষায় বসা যাবে ৩৯ বছর পর্যন্ত৷ এতদিন এই দুই পদে চাকরির পরীক্ষায় বসার সর্বোচ্চ বয়স ছিল ৩২ বছর।
শুক্রবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকার শীঘ্রই বিস্তারিত নির্দেশিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করবে৷
নবান্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, তফসিলি জাতি ও উপজাতি ও অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণির প্রার্থীরা ৪১ বছর বয়স পর্যন্ত ডব্লিউবিসিএস এবং ৪৪ বছর পর্যন্ত ডব্লিউবিপিএস পরীক্ষায় বসতে পারবেন৷ আগে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৩৭ বছর৷ অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণির (ওবিসি) ছেলেমেয়েরা ডব্লিউবিসিএস পদে ৩৯ বছর পর্যন্ত এবং ডব্লিউবিপিএস পরীক্ষায় ৪২ বছর পর্যন্ত সুযোগ থাকছে৷ এই দুই পদের ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ করে৷
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার আগেই চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণি অর্থাৎ গ্রুপ ‘ডি’ ও ‘সি’ পদে সাধারণ শ্রেণির জন্য নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়স ৩৭ থেকে বাডিয়ে ৪০ বছর করেছে৷
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অবসরের বয়স বাড়ানোর কোনও সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি৷ একমাত্র চিকিৎসক এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসরের বয়স বাড়ানো হয়েছে৷ প্রশাসনে লোকাভাব ক্রমশ প্রকট হলেও সেখানে নতুন নিয়োগের বদলে অবসরপ্রাপ্তদেরই পুনর্নিয়োগের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ বহু জায়গায় নতুন মুখের বদলে অবসরপ্রাপ্তদের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হচ্ছে৷
শুধু বয়ঃসীমা বাড়িয়েই ক্ষান্ত থাকেনি রাজ্যের তৃণমূল সরকার। তফশিলি জাতি ও উপজাতির শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য ২০ লাখ রুপি বিদেশি শিক্ষার ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া হবে বলেও ঘোষিত হয়েছে। সেইসঙ্গে মমতা আশ্বাস দিয়েছেন সিভিক ভলেন্টিয়ার থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা (চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী) ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত নিশ্চিত চাকরি করতে পারবেন। এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
তবে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স বাড়লেও অবসরের বয়স ৬০ বছর থাকায় একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ কারণ বেশি বয়সে চাকরি পেলে কত দিন আর চাকরি করার সুযোগ থাকবে?
(ঢাকাটাইমস/২৮জানুয়ারি/জেএস)