মাদারীপুরে ৬ ইউপি নির্বাচনে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা
সীমানা জটিলতায় আটকে থাকা মাদারীপুরের দুই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৬ এপ্রিল। তাই শেষ মুহূর্তে গ্রাম-গঞ্জে সরব হয়ে উঠেছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তবে হুমকিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অবশ্য, আচরণবিধির অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা। আর আইন-শৃংঙ্খলা রক্ষার জন্যে সকল প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ বিভাগ।
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম, খালিয়া, হোসেনপুর, বদরপাশা ও কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর ও পূর্ব এনায়েতনগর ইউপি নির্বাচন আগামী ১৬ এপ্রিল। এখন এই নির্বাচনকে সামনে প্রার্থীরা দিন-রাত চষে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লাসহ অলি-গলিতে। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষ। তবে ক্ষমতাসীন দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচারণ বিধি ভঙ্গসহ নানা অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
তাদের দাবি, ক্ষমতাকে পুঁজি করে নির্বাচনের ফলাফল কারচুপি করবে ক্ষমতাসীনরা।
এ ব্যাপারে খালিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হামিদুল শাহআলম মিয়া জানান, আমার ইউপিতে ৪টি কেন্দ্রে মারাত্মক ঝুঁকিপূণ। এসব কেন্দ্রে ভোট কারচুপি করার সম্ভবনা রয়েছে। তাই এই নির্বাচনে সেনা বাহিনী, বিজিপি, র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নের দাবি জানাই।
হোসেনপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, প্রতি কেন্দ্রে যে যার ভোট যেন দিতে পারে- সেই দাবি জানাই। তবে এখানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে ভোটারদের। আমি আশা রাখব, প্রশাসন যদি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করান, তাহলে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব।
এছাড়া আমগ্রাম ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কালকিনির এনায়েতনগর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান বেপারী এবং পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী রেহানা বেগম একই অভিযোগ করেন।
তবে, এসব অভিযোগ মানতে নারাজ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। তারা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমগ্রাম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জমির উদ্দিন খান বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মার্কা দিয়েছেন, আশা রাখি জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে সেই আশা পূরণ করবে।
একই দাবি হোসেনপুর ইউপির আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আয়নাল শেখের। তিনিও জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
এদিকে কালকিনির এনায়েতনগর ইউপির আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল্লাহ মারুফ ও পূর্ব এনায়েতনগরের প্রার্থী বাদল তালুকদার ডিজিটাল ইউনিয়ন গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তবে ভোটাররা খুঁজছেন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী। তারা স্থানীয় এই নির্বাচনে যোগ্যতাকেই মূল্যায়ন করবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সমন্বিত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ভূইয়া।
অন্যদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, যদি কেউ আচারণ বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ করেন, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২৩ জন প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৩৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ১৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বদ্ধিতা করছেন। ৫৬টি ভোট কেন্দ্রে ২৫৪টি বুথে ৭৫ হাজার ৫৯৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন