জাহাঙ্গীরনগরে সাপ আতঙ্ক

জাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩০ জুলাই ২০১৭, ১৭:২৫ | প্রকাশিত : ৩০ জুলাই ২০১৭, ১৫:৪৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। আবাসস্থল ছেড়ে লোকালয়ে আবাসিক হলগুলোয় ঢুকে পড়ছে বিষাক্ত গোখরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃষ্টির কারণে সাপের আবাসস্থলে পানি ঢুকে যাওয়ায় শুকনো বাসস্থানের সন্ধান ও খাদ্য সংকটের কারণে হলগুলোতে সাপ চলে আসছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য শিক্ষার্থীদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দেন তারা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে। জাবির অন্যান্য আবাসিক হলের তুলনায় এই হলটির চারদিকে গাছপালা এবং ঝোপ-ঝাড় বেশি হওয়ায় সম্প্রতি গোখরা সাপের আনাগোনা বেড়েছে বিভিন্ন ব্লকে। যত্র-তত্র দেখা মিলছে সাপের। গত দশ দিনে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৭টি গোখরা সাপ মারা পড়েছে শিক্ষার্থীদের হাতে।

গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে হলের বি ব্লকের আঙিনায় সাপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে উঠে শিক্ষার্থীরা। পরে বন্যপ্রাণী গবেষক ও প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো কামরুল হাসানকে জানালে তিনি এসে সাপ দুটি উদ্ধার করেন।

গত ২০ জুলাই একসঙ্গে তিনটি সাপ মারার পর শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে কার্বলিক এসিড, হলের সিড়িতে লাইট লাগানো ও আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার দাবি জানান। এরপর কয়েকদিন সাপের উপদ্রব কমলেও গত বৃহস্পতিবার হলের বি ব্লক থেকে প্রায় আড়াই হাত লম্বা গোখরা সাপ মারা হয়। শুক্রবার দুপুরে বি ব্লক থেকে এবং রাতে এ ব্লক থেকে আরও দুটি গোখরা সাপের বাচ্চা মারা হয়।

মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ও গালিব বলেন, ‘হলের চারপাশের ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণেই সাপের আনাগোনা বাড়ছে। আমরা এ বিষয়ে হল প্রশাসনকে জানালেও তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এখন আমাদের নিজেদের রুমেই অবস্থান করতে ভয় লাগে।’

তবে শুধু মীর মশাররফ হোসেন হলেই নয়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় সাপের বিচরণ দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার এলাকা, মওলানা ভাসানী হল, বটতলা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে একাধিক সাপ মারা হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীদের সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের পরামর্শ দিয়ে প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো কামরুল হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এই সময়টা গোখরা সাপের প্রজননের মৌসুম। আর মীর মশাররফ হোসেন হল অনেক পুরনো হওয়ার কারণে বিভিন্ন অংশের ইট খসে পড়েছে। গতকাল ইটের ফাঁকে ও বিভিন্ন কর্নারে আমরা বেশ কয়েকটি গর্ত খুজে পেয়েছি। যেখানে সাপ বাসা বানিয়েছে বলে ধারণা করছি। এজন্য হলের সবখানে আলোর ব্যবস্থা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া আমার প্রশাসনের সাথে কথা বলে একটি কমিটি করছি যাতে কোথাও সাপ পাওয়ার খবর পেলে দ্রুত তা উদ্ধার করতে পারি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাপে কাটা রোগীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই।

জাবি মেডিকেল অফিসার বীরেন্দ্র কুমার বিশ্বাস জানান, কোনো শিক্ষার্থীকে সাপে কাটলে তার জন্য তৎক্ষণাৎ কোনো চিকিৎসা দেয়ার ওষুধ বা বিষ নিস্ক্রিয়কারী ‘এন্টিভেনম’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নেই। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

মীর মশাররফ হোসেন হল প্রাধ্যক্ষ শফি মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব একটু বেশি থাকে। হলের চারপাশে কার্বলিক এসিড ছিটানো হয়েছে, লাইট লাগানো হয়েছে, পানি নিষ্কাশনের পাইপে জাল ব্যবহার করা হয়েছে এবং চারপাশের ঝোপঁ-জঙ্গল কাটা হচ্ছে।’

(ঢাকাটাইমস/৩০জুলাই/প্রতিনিধি/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :