দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে মৌচাক-রামপুরা সড়কের

আউয়াল খাঁন, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ০৮:০৭| আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ১০:২১
অ- অ+

মৌচাক-রামপুরা সড়কের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি এবার কমবে। এই ব্যস্ত সড়কটির ভয়াবহ খানাখন্দগুলো প্রায় এক-বছর পর মেরামত করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

মগবাজার-মৌচাক উড়াল সেতুর কাজ শুরু হওয়ার পর প্রায় তিন বছর ধরে ভাঙা সড়কের তিক্ত অভিজ্ঞতা সয়ে আসছে সংশ্লিষ্ট এলাকা ও ওই পথে চলাচলকারী লোকজন।

মালিবাগ রেলগেট থেকে রামপুরা হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সবচেয়ে কম ট্রাফিক সিগনালের সড়কটি রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, মৌচাক থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত অংশ এরই মধ্যে পিচঢালাই দিয়ে মসৃণ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে রামপুরা টেলিভিশন সেন্টারের সামনে থেকে পূর্ব অংশ ধরে রামপুরা কাঁচাবাজারের কিছুটা আগে পর্যন্ত উভয় পাশ ও বৌ-বাজার মোড় পর্যন্ত পূর্ব অংশ গতকাল রাত পর্যন্ত পিচ ঢালাই করে মসৃণ করা হয়েছে। প্রায় তিন ইঞ্চি পুরুত্বে চলছে মসৃণ ঢালাই কাজ।

যানজট নিরসনে মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ ও রামপুরা এলাকাজুড়ে ২০১৩ সালে শুরু হয় উড়াল সেতুর নির্মাণকাজ। ২০১৫ সালের মধ্যে গোটা উড়াল সড়কের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বারবার নকশা পরিবর্তনসহ নানা জটিলতায় কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব করছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। ফলে ২০১৩ সাল থেকে চলতি সময় পর্যন্ত প্রায় চার বছর উড়াল সড়কের নিচের অংশ মেরামতের কোনো উদ্যোগ ছিল না। ফলে মেরামতের অভাবে সড়কটি ভাঙতে ভাঙতে গাড়ি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার ধীরগতির খোঁড়াখুড়িতে সড়কটি খুবই ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে ওঠে। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতে জনগণের ভোগান্তিতে নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা হয় সড়কজুড়ে। সংবাদ মাধ্যমগুলোতে এই সড়কের করুণ চিত্র বারবার শিরোনাম হয়। অবশেষে শুরু হয় মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর এলাকার উড়াল সেতুর নিচের সড়ক মেরামতের কাজ।

এর আগে জনগণের ভোগান্তির মধ্যেই গত বছরের শেষ দিকে ঢাকা ওয়াসা রামপুরা থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করার জন্য ফুটপাতের পাশে ছোট ড্রেন ও মূল সড়কের মাঝ বরাবর বড় সুয়ারেজ লাইন বসানের জন্য আবার খোঁড়াখুড়ি শুরু করে। এই এক বছরে ধীরে ধীরে রামপুরা থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত সড়কটি চিত্র ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।

গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে রামপুরা সড়কের করুণ চিত্র নিয়ে ঢাকাটাইমসের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) যোগাযোগ করা হলে ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ‘রামপুরার এই সড়কটি আমি দেখেছি। সড়কটিতে আসলেই অনেক ভোগান্তি। এত দিন বৃষ্টি ও একের পর এক খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়কটির কাজে হাত দিতে পারিনি। তবে এখন বৃষ্টি প্রায় শেষের দিকে। বৃষ্টির বাধা না এলে আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত রাস্তা মসৃণ করে ফেলতে পারবো। পাশাপাশি দুই মাসের মধ্যে, নতুন রাস্তা, ওয়াপদা রোডসহ গলির পথগুলোও মেরামত করে ফেলবো।’

ডিএনসিসির এই প্রকৌশলির কথা অনুসারে এক মাসের মধ্যে সড়কটির মেরামত কাজ শেষ না হলেও রামপুরা ব্রিজ থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত ৪০ শতাংশের মতো মেরামত কাজ শেষ হয়েছে।

অন্যদিকে হাতিরঝিল, বনশ্রী ও রামপুরা-বাড্ডা অংশের যানজট নিরসনে ২০১৬ সালের ২৫ জুন রামপুরা ব্রিজ-সংলগ্ন বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের সামনের একটি ইউলুপ উদ্বোধন করা হয়। নকশা অনুযায়ী ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ইউলুপটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শুরুতে। ফলে ইউলুপ নির্মাণের সময়টাজুড়ে রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন সড়কটি মেরামতের বাইরে থাকে। ইউলুপ নির্মাণ শেষে মেরামত শুরু হয় সড়কটি। এর পর সড়কটি মেরামত হয়। কিন্তু প্রায় এক বছর আগে ঢাকা ওয়াসা পুনরায় রামপুরার এই মসৃণ সড়কটি খোঁড়াখুড়ি করে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘প্রায় এক বছর আগে রামপুরা অংশে ওয়াসার পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সড়কের মাঝামাঝি অংশ বড় করে খুঁড়েছিল। কাজ শেষে আর মেরামতও করা হয়নি সড়কটি। ফলে মূল সড়ক ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় সড়কটি এড়িয়ে চলারও কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবহন চালকরা।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কুষ্টিয়ায় জাসদ কর্মী হত‌্যার ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩
চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির আলোচনা সভা চলছে
নরসিংদীতে ৮ মামলার আসামিকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা
কলরেকর্ড ফাঁসের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন বরখাস্ত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা