শ্রীপুরে কৃষকের ধান পোকার পেটে!

ফয়সাল আহমেদ, শ্রীপুর (গাজীপুর)
| আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩৬ | প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩০

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিভিন্ন এলাকায় আমন ধানের মাঠ পোকার হাত হতে রক্ষা করতে না পেরে এখন জমিতেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন কৃষক। নবান্নের আনন্দের বদলে তাদের চোখেমুখে বিষাদের ছায়া। ফলে চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সাড়ে তের হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ হাজার নয়শ হেক্টর জমিতে উফসি জাত ও পঁচিশ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) এবং প্রায় পাঁচশ হেক্টর জমিতে দেশীয় প্রজাতির ধানের চাষ হয়েছে। চলতি আমনের মৌসুমে আবহাওয়া অনূকূলে না থাকায় এবং অতিবৃষ্টিতে কৃষকের ধানের জমিতে বিএলবি রোগ ও বাদামি ঘাস ফড়িংয়ের আক্রমণ হয়েছে। কৃষকের আসাবধানতায় অনেক জায়গায় এ রোগ থেকে ধানের জমিকে রক্ষা করা যায়নি। এ পোকা অতি দ্রুত সময়ে ধান গাছে আক্রমণ করে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা না নিলে এর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই।

গোদারচালা গ্রামের কৃষক আজমত আলী বলেন,তিনি চার বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলেন। ধান গাছে থোর আসার আগ মুহূর্তে হঠাৎ পাতা পুড়ে যেতে দেখি। তাৎক্ষণিক স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আমায় কিছু ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেয়। কিন্তু তা প্রয়োগ করেও কোন ফল পাইনি।

একই এলাকার কৃষক সৈয়দ আলী বলেন,এ রোগের আক্রমণ এত তীব্র যে ধান গাছ মরে খড়ে পরিণত হয়ে যায়। কিন্তু এসব খড়গুলোও গবাদি পশু খায় না। এ কারণেই আমরা ধান ক্ষেতেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছি।

সাতখামাইর গ্রামের কৃষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, এবার পোকার আক্রমন এত বেশি ছিল যে,ফসলের মাঠে এখন ধান গাছ দাঁড়িয়ে আছে। শুধু ধান নেই। চাউলের দাম বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে ধার দেনা করে তিন বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলাম। এখন চারপাশে শুধুই অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি। কিভাবে দেনা শোধ করব!

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার লক্ষ্যে উপজেলার প্রতি ইউনিয়নে তিনজন ও একটি পৌরসভায় একজন করে মোট পঁচিশ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজ করছি। পোকার আক্রমণ হতে আমন ধান রক্ষায় কৃষকদের সচেতন করে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল, অনেকে আমাদের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করছে,আবার অনেকে আমাদের কথা শোনেনি। হয়ত তাদের ধানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুয়িদ উল হাসান বলেন, চলতি আমনের যে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল বিভিন্ন জায়গায় বাদামি ঘাস ফড়িং ও বিএলবি রোগের আক্রমণ ও কৃষকদের অসচেতনতায় উৎপাদন হয়ত কিছুটা কম হবে। ধানের জমির যে অংশগুলো নষ্ট হয়ে গেছে, তা পুড়িয়ে ফেলতে কৃষকদের নির্দেশনা দেয়ায় হয়ত তারা তা পুড়াচ্ছে। তবে উপজেলার সিংহভাগ এলাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :