কুষ্টিয়ার সাঈদ যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি তৎপরতায়

প্রতীক ওমর, বগুড়া
| আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৪৫ | প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৩৭

আবু সাঈদ ওরফে কারীম ওরফে তালহা ওরফে শ্যামলকে বাংলাদেশ ছাড়াও হন্যে হয়ে খুঁজছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার এই বাসিন্দা একই সঙ্গে দুই দেশেই জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা বলছে, দুই দেশের জঙ্গিদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগের প্রমাণ সাঈদ। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর এলাকায় ধরা পড়া সাঈদ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেএমবির প্রধান বলে তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণ মামলারও অন্যতম আসামি।

সাঈদের ধরা পড়ার তথ্য শনিবার সকালেই গণমাধ্যমকর্মীদেরকে নিশ্চিত করেছিলেন বগুড়া পুলিশের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী। পরে দুপুরে তার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।

পুলিশ সুপার জানান, ২০০২ সালে উত্তরাঞ্চলে জঙ্গি সংগঠন জেএমবির তৎপরতা শুরুর সময় তাদের সঙ্গে জড়ান সাঈদ। ২০০৫ সালে সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা মামলার অন্যতম আসামি সাঈদ ২০০৭ সালে পালিয়ে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।

পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার জেএমবি সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করেন সাঈদ। তারপর সেখানেও জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত হন তিনি। সাংগঠনিক কাজে দক্ষতা ও তার উগ্রপন্থী মনোভাব দেখে ২০১০ সালে ভারতের নদীয়া জেলার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। ২০১২ সালে তার কার্যক্রমের আওতায় যোগ হয় আরো দুই জেলা বীরভূম ও বর্ধমান।

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণেও সাঈদ অংশ নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই বিস্ফোরণে দুই জন নিহতের পর বর্ধমান থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি-এনআইএর কলকাতা শাখা সাঈদকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর ২০১৫ সালে সাঈদ আবার বাংলাদেশে ফিরে আসে। এসে তিনি যোগ দেন নব্য জেএমবিতে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, ২০১৭ সালের প্রথম দিকে সাঈদকে নব্য জেএমবির দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান ও শুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। সাঈদ কাদেরকে এই তৎপরতায় জড়িয়েছেন, তাদের কী কী পরিকল্পনা ছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

পুলিশ সুপার জানান, ২০০২ সালে জেএমবিতে যোগ দেয়ার পর উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন সাঈদ। ২০০৪ সালে রাজশাহী জেলার সামরিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। সে সময় জেএমবি নেতা বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের সাথে সর্বহারা নিধন অভিযানে অংশগ্রহণ করেন সাঈদ। ২০০৪ সালে নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা সোহেল মাহফুজ তার মাধ্যমে জেএমবিতে যোগ দেন বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

২০০৫ সালে সাঈদ নওগাঁ জেলার দায়িত্ব পান। ওই বছরেই ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে আর সাঈদের নেতেৃত্বে নওগাঁয় ফোটানো হয় চারটি বোমা। এই ঘটনায় করা মামলাতেই নওগাঁর বিচারিক আদালত তার মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছে।

ঢাকাটাইমস/৩০ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :