চুয়াডাঙ্গায় গরমে নাকাল মানুষ, রোগী বাড়ছে হাসপাতালে
তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। প্রখর রোদ আর গরম বাতাসে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। গরমে সবচেয়ে বেশি নাকাল হয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেই অতিরিক্ত ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদেরকে।
গত কয়েকদিন টানা তাপদাহের কারণে হিটস্ট্রোকসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন প্রতিদিন।
তাপমাত্রা বাড়ায় নাজেহাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। যেন ঘর থেকেই বের হওয়ায় দায় হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির দেখা না মেলায় গরমের তীব্রতা ক্রমই বাড়ছে। তীব্র দাবদাহে মানুষ ঘর থেকে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন। গরমের কারণে দুপুরের আগেই শহরের বেশিরভাগ এলাকা প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। একটু স্বস্তির জন্য অনেকে গাছের তলা বা পার্কে গিয়ে বসার চেষ্টা করেছেন। সেখানেও তপ্ত হাওয়ার ছোবল। ফ্যানের বাতাসও গরম। এই পরিস্থিতিতে শুধু মানুষেরই নয়, পশুপাখির প্রাণও ওষ্ঠাগত।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বাগান পাড়ার বাসিন্দা রিপা খন্দকার জানান, গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে বিদ্যুতের আসা যাওয়া শুরু হয়েছে। লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি লো ভোল্টেজের কারণে বাড়িতে এসি তো লোডই নিচ্ছে না, সিলিং ফ্যানও চলছে ধীরগতিতে।
দুুপরে শহরের শহীদ হাসান চত্বরে কথা হয় রিকশা চালক রহিম মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে শরীর চলে না। তিনি অ্যাজমার রোগী। একটু রিকশা চালালেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাড়িতে খাবার নেই, তাই অসুস্থ শরীরেই রিকশা চালাতে এসেছেন।
তীব্র তাপদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্তসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন দুই থেকে আড়াইশ রোগী। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বারান্দাতেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামীম কবির জানান, প্রতিদিন গড়ে এক শ নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়াসহ গরমজনিত নানা রোগে। এতে করে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্টাফদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো।
এদিকে আবহাওয়ার সর্তক বার্তায় নেই কোনো সুখবর। চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের পর্যবেক্ষক সামাদুল হক জানান, ভৌগলিক অবস্থার কারণে চুয়াডাঙ্গাতে অতিরিক্ত গরম পড়ছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টি মিলবে না। এতে করে তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।
(ঢাকাটাইমস/১৩মে/এমআর)