গ্রামে থেকেও পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ জুন ২০১৯, ১১:১৩
অ- অ+

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে তথ্যপ্রযুক্তির সম্পৃক্ততা অনস্বীকার্য। এখন উপজেলা বা গ্রামে থাকি বলে পিছিয়ে পরার সময় নয়। ইন্টারনেটের যুগে গ্রাম আর শহরে কোন পার্থক্য নেই। উপজেলা পর্যায়েও পৌঁছে গেছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইন। মোবাইলের ইন্টারনেটও সহজলভ্য। এখন দরকার শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে এর স্বদব্যবহার শেখানো। তাহলেই দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবো।

২৯ জুন শনিবার ফেনী ফুলগাজী উপজেলা অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (আইবিপিসি) যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচেতনতা কর্মসূচি’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ফেনীর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

তিনি আরো বলেন, ফেনীর রয়েছে গৌরবান্বিত ইতিহাস। বাংলাদেশে আইসিটি সেক্টরে নেতৃত্ব দেয়া অনেক গুণীজনের এই অঞ্চলে জন্ম। তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের লোকেরা আমাদের দেশে কাজ করতে আসে। আমরা যেমন এখন জনশক্তি রপ্তানি করি একটা সময় বাহিরের দেশের মানুষরা আইসিটিতে কাজ করার জন্য আমাদের দেশে আসবে। সেজন্য তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক বিষয়গুলোকে এড়িয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সারা পৃথিবীতে নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলী নিয়ে বড় হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান দূরদর্শী ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তানে থেকেও তিনি স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনাও আইসিটি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ডিজিটাল মানেই আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রসরমান। আমাদের পিছনে ফেরার সময় নেই। এগিয়ে যেতে হবে দৃঢ় প্রত্যয়ে।বিসিএস এবং আইপিবিসিকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এমন কার্যকরী কর্মশালা পরিচালনা করার জন্য। স্কুল কলেজে শেখ রাসেল ল্যাবের পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) সুজন চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তি বান্ধব। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছিলেন, তার সুফল আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পারছি। শুধু দেশেই নয়, এই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছি। একসময়ের দরিদ্র বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বর্তমান শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ফেনী ফুলগাজী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে প্রযুক্তির সঙ্গে দুরত্ব রাখার কোন সুযোগ নেই। চিঠির যুগ বদলে এসেছে ই-মেইলের যুগ। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে প্রযুক্তির স্বদব্যবহার শিখতে হবে। নেতিবাচক যত ব্যবহার আছে, তা থেকে দুরে থাকতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তোমরাই হবে ভবিষ্যতের কান্ডারি। তাই নিজেকে যোগ্য করে তুলতে এই ধরনের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান আহরণ করতে হবে। তাহলেই তুমি তোমার জীবনে সফলতার দেখা পাবে।

কর্মসূচির মূখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক কে এম হাসান রিপন। তথ্যপ্রযুক্তির হালনাগাদ চিত্র সম্পর্কে তিনি কর্মসূচিতে আগত শিক্ষার্থীদের স্বচ্ছ ধারণা দেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), ফোর্থ ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন, রোবটিক্স, অটোমেশনের মাধ্যমে গাড়ির নিয়ন্ত্রনসহ নিত্যনতুন প্রযুক্তি কিভাবে মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানার আগ্রহ প্রতীয়মান হয়।

কর্মশালার সমন্বয়কারী হিসেবে বিসিএস মহাসচিব মো. মোশারফ হোসেন সুমন বলেন, ফুলগাজীর প্রশাসন, জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। আমাদের এই কর্মশালা সফল করতে আমরা সর্বস্তর থেকেই পরিপূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি। আজ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে ফেনীর লোকজন তথ্যপ্রযুক্তি বান্ধব। এই অঞ্চলে হাইটেক পার্ক স্থাপন করা এখন সময়ের দাবি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস এর কুমিল্লা শাখার চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বুলবুল। তিনি বলেন, বিসিএস তথ্যপ্রযুক্তির আলো সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে থাকে। এই আয়োজন থেকে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হয়। রাজধানীতে আইসিটি নিয়ে কি ভাবনা চলছে, পৃথিবীতে নতুন কি কি আবিষ্কার হচ্ছে, কিভাবে গুগল এবং ইউটিউব ব্যবহার করে উপকৃত হওয়া যাবে এইসব বিষয়গুলো সম্পর্কে গল্পের মতো শেখান প্রশিক্ষক। এতে শিক্ষার্থীরা বই পড়ে যতটা উপকৃত হন, তারচেয়েও বেশি কার্যকরী শিক্ষা গ্রহন করতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে ফেনীর শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে ভূমিকা রাখবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।

কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন আইবিপিসির প্রতিনিধি ফয়সাল খান , বিসিএস পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ঢাকা এবং ফেনীর আইসিটি খাতের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিবৃতি: মিডিয়াকে হুমকি প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ
কুমিল্লায় নার্সারি থেকে বৃদ্ধের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
ঝিনাইদহে সুদীপ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
সখীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা