‘নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে সাংবাদিকতা’
বিশিষ্ট সাংবাদিক, জাতীয় প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ ফেডালের সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘সাংবাদিকতা কখনোই মসৃণ পথে এগোয়নি, এখনো না, ভবিষ্যতেও এগোবে না।
বর্তমানে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে সাংবাদিকতা। নানা বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়েই সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে এবং সাংবাদিকতায় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল ঘটাতে হবে।’
নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আয়োজিত এক সভায় প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। গত ১৩ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় সিটির জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ প্লাজা মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সদ্য প্রয়াত বাংলাদেশের চারজন সাংবাদিক যথাক্রমে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা ও ক্রীড়া সাংবাদিক অজয় বড়ুয়া, ক্রাইম রিপোর্টাস এসোসিয়েশন (ক্র্যাব)-এর সাবেক সভাপতি সৈয়দ আখতারুজ্জামান সিদ্দিকী লাবলু এবং হাসান আরেফিনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং প্রয়াত চারজন সাংবাদিকদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করেন ক্লাবের কার্যকরী সদস্য ও ইয়র্ক বাংলা সম্পাদক মাওলানা রশীদ আহমদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শিবলী চৌধুরী কায়েস।
পরে আলোচনায় অংশ নেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, প্রেসক্লাবের অন্যতম উপদেষ্টা ও আজকাল সম্পাদক মনজুর আহমদ, উপদেষ্টা নিনি ওয়াহেদ, মঈনুদ্দীন নাসের, টাইম টিভির সিইও এবং বাংলা পত্রিকা সম্পাদক আবু তাহের, বিশিষ্ট অভিনেত্রী রেখা আহমদ, রানার সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, ভয়েস অব আমেরিকা’র নিউইয়র্ক প্রতিনিধি আকবর হায়দার কিরণ, লেখক-সাংবাদিক এবিএম সালেহ উদ্দীন, ক্লাবের সহসভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল, বিএফইউজে’র সাবেক দপ্তর সম্পাদক ইমরান আনসারী, আমেরিকা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দীন সাগর, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাংবাদিক মঈন উদ্দিন আহমেদ ও মুজাহিদ আনসারী।
অনুষ্ঠানে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ মরহুম সাংবাদিক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘তিনি আপাদমস্তক সাংবাদিক ছিলেন। ছিলেন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার অ্যাঙ্করের পথিকৃত।’ তিনি অন্যান্য সাংবাদিকদেরও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।
খ্যাতিমান এই সাংবাদিক বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে ৬০-এর দশক ছিল সাংবাদিকতার স্বর্ণযুগ। ৮০’র দশকের পর সাংবাদিকতা আর সত্যিকারের সাংবাদিকতা নেই। এখন দেশের সাংবাদিকতার অবস্থা সবাই অবগত। আমরা দেশে থেকে যা জানি না, প্রবাসীরা বিদেশে থেকে তা জানেন। আর বিভক্তি কোথায় নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তাররাও তো আজ বিভক্ত। এই বিভক্তির জন্য দেশের রাজনৈতিক দীনতাই দায়ী। দেশের রাজনীতিসহ সমাজে আজ নীতি, নৈতিকতা, মূলবোধ নেই। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। এর মধ্যেও এগিয়ে যেতে হবে।’
রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘সকল অনৈতিকতার বিরুদ্ধে দেশের মানুষের মনে বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। কিন্তু বিপ্লব হতে নেতা লাগে, সঠিক নেতৃত্ব লাগে। সেই নীতিবান নেতা কোথায়?’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন খান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার ফরহাদ, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদসহ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর সরকার, বাংলা ভিশনের নিউইয়র্ক প্রতিনিধি নিহার সিদ্দিকী, ফটো সাংবাদিক এ হাই স্বপন ও শাহ জে চৌধুরী এবং কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট হুমরান আনসারী ও ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/জেবি)