গাজীপুরে পোশাকশ্রমিক অসন্তোষে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০২০, ১৯:২৫

গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনায় লোকসমাগম হওয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। মঙ্গলবারও বেশ কয়েকটি কারখানায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক অসন্তোষ। ফলে পুলিশের পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে শ্রমিকদের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কাজ করতে যাওয়া পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন সংক্রমণের ঝুঁকিতে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে তিন সড়ক, মালেকের বাড়ি এবং টঙ্গীতে বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। এসময় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, করোনা নয়- এখন বেতন না পেয়ে না খেয়ে মরার আশঙ্কায় তারা রাস্তায় নেমেছেন। তাদের দোকান বাকি, ঘর ভাড়া বাকি পড়ায় এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র গাছা থানায় ২১ জন পুলিশ সদস্যের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স, চিকিৎসক ও মেডিক্যাল কর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। লকডাউনে চলাচল সীমিত করা হলেও গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ কারখানায় মালিকপক্ষ শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেছে। তবে এখনো কিছু কারখানার মালিক পক্ষ তাদের বেতন না দিয়ে টালবাহানা করছে। এতে আজকের শ্রমিকদের বিক্ষোভসহ গত কয়েকটি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় অতিরিক্ত লোক সমাগম করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এছাড়া মানুষের অযথা ঘুরাঘুরি এবং সচেতনতার অভাব এই সমস্যাকে প্রকট করে তুলছে।

এদিকে, লকডাউন অমান্য করে দেখা গেছে হাট, বাজার ও অলিগলির দোকানে ভিড়। সেখানে মানা হচ্ছে না সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব। যদিও মাঠ পর্যায়ে শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।

শ্রমিক অসন্তোষ ঠেকাতে বিভিন্ন কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন সিটি মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এসময় তিনি বলেন, সিটি এলাকায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিজ অর্থায়নে ৩০ হাজার পিস পিপিই, করোনা শনাক্তে ৮০ হাজার কিট এবং ২০ হাজার এন ৯৫ মাস্ক চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসক, পুলিশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা যেহেতু বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের জন্য এগুলো আনা হয়েছে। এছাড়া তাদের জন্য তিনটি বেসরকারি তিনটি রিসোর্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি আমার প্রথম লক্ষ্য। এখন পরিস্থিতি যেহেতু আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে, তাদের কারণে যেন পরিবারের সদস্যরা ঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য হোটেল ও রিসোর্টে তাদের থাকার ব্যবস্থা করছি।

প্রসঙ্গত, গাজীপুরে গত সোমবার জেলায় নতুন করে ১০৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২৭৯ জন। ফলে করোনাভাইরাসের নতুন হটস্পট এখন গাজীপুর।

(ঢাকাটাইমস/২১এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :