খাগড়াছড়িতে ‘১ মিনিটের বাজার’

করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক তখনই বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে দেশবাসীর আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তেমনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যাতিক্রমধর্মী একটি উদ্যোগের নাম ‘১ মিনিটের বাজার’।

বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলা স্টেডিয়ামে খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও খাগড়াছড়ি সদর সেনা জোন কর্তৃক আয়োজন ও পরিচালনায় এর শুভ উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়জুর রহমান।

এসময় খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল জাহেদুল ইসলাম, মেজর রুমন পারভেজ, জিএসওটু মেজর সালাহউদ্দিনসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রান্তিক চাষীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য যেমন সহজে বিক্রি করতে পারছেন না ঠিক তেমনি নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী অর্থাভাবে এবং যোগান না থাকায় কিনতে পারছেন না।

এই অবস্থায় খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কর্তৃপক্ষ প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী কিনে তা ‘১ মিনিটের বাজার’ নামে খাগড়াছড়ি জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে।

নামে বাজার হলেও এখানে সবাই তাদের পছন্দের সব উপকরণই পেয়েছেন বিনামূল্যে। খাগড়াছড়ি স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা যায়, এখানে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে সবাই যার যার পণ্য সংগ্রহ করছেন।

এই বাজার থেকে বিনামূল্যে চাল, আলু, পুঁইশাক, বরবটি, চিচিঙ্গা, করলা, ঢেঁড়স, লেবু, আনারস, সাবান, খাবার স্যালাইন ও সিভিট সংগ্রহ করার সুযোগ পেয়েছেন সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষ।

খাগড়াছড়ি সেনা রিজিয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিপদগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষক ও সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন তারা। খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এইসব খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করা হয়েছে। যেমন: লেবু রামগড় থেকে, আনারস মহালছড়ি থেকে এবং শাক সবজি পানছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে কিনে আনা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ চালিয়ে যাবার পরিকল্পনা আছে তাদের।

এদিকে এই উদ্যোগের জন্য ভীষণ খুশি সাধারণ প্রান্তিক চাষীরা এবং নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। বাজারে এসে অনেক দরিদ্র মানুষই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন নিজের পছন্দের পণ্যসামগ্রী এত সহজে বিনামূল্যে পাবার ব্যবস্থা দেখে। তারা সবাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা চান ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই ধরনের সেবামূলক কাজ চালিয়ে যাক।

(ঢাকাটাইমস/২০মে/কেএম)