স্বাস্থ্যখাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতার ‘প্রচণ্ড’ ঘাটতি: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটকাটাইমস
| আপডেট : ০৭ জুন ২০২০, ১৬:২৩ | প্রকাশিত : ০৭ জুন ২০২০, ১৬:২০

স্বাস্থ্যখাতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতার প্রচণ্ড ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, স্বাস্থ্যখাতে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পারফরমেন্স খুবই নিম্ন। যার ফলে এ খাতে বাজেট বাড়ানো যাচ্ছে না।

রবিবার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান এবং বাজেটের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পে বিশেষ করে এখন স্বাস্থ্যখাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্ষেত্রে যে এত নিম্ন পারফরমেন্স, যার কারণে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বাড়ানো যাচ্ছে না। আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের দক্ষতা নেই এবং সেটা অর্জনও করতে পারছি না।

দেশের উন্নয়ন জোরদারে সরকার প্রতি বছরই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রয়োজনীয় তহবিল জোগান দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই অর্থবছর শেষে দেখা যায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ পরিকল্পিত ও যথাযথভাবে ব্যয় হয় না। ফলে শেষের দিকে এসে এডিপি কাটছাঁট করতে হয়।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সেই অনুযায়ী অন্যান্য জরুরি খাতে আমরা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারি না। নির্দিষ্ট অর্থবছরের মধ্যে প্রকল্প ঠিক মতো বাস্তবায়ন করতে পারি না। আর এর জন্য সংস্কার ও প্রতিষ্ঠানিক কাঠামোর দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, করোনা মহামারির সময় প্রবৃদ্ধির মোহ থেকে বের হতে হবে। চারটি বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে। একটা হলো এই বাজেট কীভাবে অর্থায়ন করব। সেখানে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। সেটা করতে হবে করজাল বাড়িয়ে, কর ফাঁকি বন্ধ করে, অর্থপাচার বন্ধ করে। অর্থ যে পাচার হয়েছে সেগুলো দেশে ফেরত আনতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

উৎপাদনশীল খাতে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, উৎপাদনশীল সরকারি ব্যায় বাড়াতে হবে যাতে মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এতে মানুষের হাতে অর্থ আসবে। যে অর্থ দিয়ে চাহিদা মেটাতে পারবেন। আমাদের সরবরাহ জনিত ঘাটতিও কমিয়ে আনতে হবে।

প্রধিকার ভিত্তিক চারটি খাতে জোর দেয়ার পরামর্শ দিয়ে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, কয়েকটি খাতে জোর দিতে হবে। স্বাস্থ্যখাত, সামিজিক সুরক্ষা, কৃষি ও খাদ্যনিরাপ্তা এবং কর্মসংস্থান। এগুলোর ভিত্তিতে প্রাধিকার ভিত্তিতে বর্ধিত আকারে বাজেট রাখতে হবে।

‘সংস্কার কর্মসূচি দ্রুত হাত নিতে হবে। প্রতি বছরই রাজস্ব ঘাটতি বিপুল রয়ে যায়। এর জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার, সংস্কার দরকার সেটা নেয়া হয় না। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হলে লক্ষটা অবাস্তব হয়ে যায়। ’

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, একদিকে রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। আরেকদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এতে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ম্যানুফ্যাকচারিং ও কন্সট্রাকশন খাত প্রত্যক্ষভাবে বড় সমস্যায় পড়েছে এবং হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও পরিবহন দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় জিডিপিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমরা যদি ধরে নিই অর্থবছরের বাকি যে সময় আছে তাতে ভালো প্রবৃদ্ধি হবে তারপরও প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো সিনারিও যদি আমরা এই বছরের জন্য চিন্তা করি তাহলে আমাদের ধারণা এ বছরের প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি হবে না।

তৌফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, আমরা যদি ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি, তাহলে তা যথেষ্ট খারাপ না। বিশ্বের অনেক দেশ এই সময়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে চলে গছে। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এই ধরনের আশঙ্কা করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০৭জুন/জেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :