বিদায়ী অর্থবছর ২০১৯-২০

বেনাপোলে রাজস্ব আয়ে ধস, লক্ষ্যমাত্রার মাত্র অর্ধেক পূরণ

বেনাপোল প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২০, ১১:৪৬

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে রাজস্ব আদায়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ধস নেমেছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্ধেকের মতো আয় হয়েছে দেশের বন্দরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সরবোচ্চ রাজস্ব আয়ের এই কাস্টমস হাউজে।

কাস্টমস হাউসে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৭০ কোটি ১২ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। তবে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও কাস্টমসের ব্যাপক কড়াকাড়ির কারণে ব্যবসায়ীরা এ পথে আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় অর্থবছর শুরুতেই রাজস্ব আয়ে পিছিয়ে ছিল এ কাস্টমস হাউজ। পরে করোনার কারণে ভারতের সঙ্গে টানা আড়াই মাস আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আহরণ নেমে যায় অর্ধেকে।

কাস্টমস সুত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৬ হাজার ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বেনাপোল কাস্টমস হাউজকে। প্রথম ১১ মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয় ৫ হাজার ৬০৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এ সময় লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আদায় করে মাত্র ২ হাজার ৫৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ৩ হাজার ৭০ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ সময় ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন পণ্য।

এর আগেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি ছিল। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল ৫ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সেবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্সোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরের শুরু থেকেই ঘাটতি হয়ে আসছিল। ফলে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট পূরণ হয়নি। বারবার রাজস্ব ঘাটতির কারণ হিসাবে তারা মনে করছেন, চাহিদা অনুপাতে বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া এবং উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন জানান, করোনায় আড়াই মাস ধরে ভারতের সঙ্গে আমদানি বন্ধ ছিল। ফলে রাজস্ব ঘাটতি আরো বেশি হয়েছে। এ পথে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন বাড়াতে হবে। পণ্য দ্রুত খালাসসহ ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে রাজ্বস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ হওয়া সম্ভব।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে প্রথমত আড়াই মাস ধরে আমদানি বন্ধ ছিল। এ ছাড়া পণ্য খালাসে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি বেড়ে যাওয়ায় কিছু ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়েছেন। এতে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন।

জানা যায়, রাজস্ব আয়ের দিক থেকে চট্রগ্রাম বন্দরের পরেই বেনাপোল বন্দরের অবস্থান। প্রতিবছর এ বন্ধর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়ে থাকে, যা থেকে সরকারের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়ে থাকে।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুন/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :