করোনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ধীরগতি: পররাষ্ট্র সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০২০, ২২:৩৫
অ- অ+

করোনাভাইরাসে ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রচেষ্টার গতি ধীর হয়ে গেছে। তবে এ পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পর এ বিষয় নিয়ে আলোচনায় গতি আসবে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

রবিবার আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত 'লেটস টক' অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা এবং ঝুঁকির হয়ে যাচ্ছে, এ অঞ্চলের জন্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, এটা কারও অজানা নয়। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজের দেশ মিয়ানমারে সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য যতভাবে সম্ভব কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর প্রচেষ্টার গতি ধীর হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পর এ বিষয় নিয়ে আলোচনায় গতি আসবে, এটাই প্রত্যাশা।’

মিয়ানমারের রাখাইনে রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী আবারো অভিযান শুরু করেছে। আর এই অভিযান রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য অন্তরায় হতে পারে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আরাকান আর্মি দমনের জন্য রাখাইনে সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করছে এবং ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের নামে সেখানে সহিংসতা চালাচ্ছে। এর ফলে বেসামরিক জনগণ হতাহত এবং একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই অভিযান রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য অন্তরায় হতে পারে।’

‘লেটস টক: রোহিঙ্গা রেসপন্স অ্যান্ড কোভিড১৯' শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক গবেষক ড. সুমাইয়া তাসনিন।

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে মিয়ানমারের দেওয়া রিপোর্ট যাচাই-বাছাই চলছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট ও আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালত দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি। তবে মাঠ পর্যায়ে উন্নতি দেখা যাচ্ছে না।’

যারা অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি না হলে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার বিষয়ে অনাগ্রহ থাকবে বলেও মন্তব্য করেন সচিব।

রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট থেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা; এই সংখ্যা কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখ ছাড়ায়। আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।

এ সময় কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত মার্চ মাস থেকেই রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে কারণে মাত্র পাঁচজন রোহিঙ্গা করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। কক্সবাজারে প্রতিদিন ৭০০ করোনার নমুনা পরীক্ষা চলছে। এটা অন্য এলাকার তুলনায় বেশি।’

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টিভেন করলিস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে বাংলাদেশ যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সেই পদক্ষেপে ইউএনএইচসিআর সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে আছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার প্রচেষ্টাতেও ইউএনএইচসিআর সক্রিয় রয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এনআই/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টেক্সাসে হঠাৎ ভয়াবহ বন্যায় ২৪ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ বহু শিশু
আন্দোলন এখন গলার কাঁটা, দিন কাটাচ্ছেন বহিষ্কার আর দুদক আতঙ্কে এনবিআর কর্মকর্তারা
ধামরাই কি আমাদের মনোজাগতিক পঁচনকেই দৃশ্যমান করল?
কারবালার নৃশংস ঘটনা: নেপথ্যে কারা?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা