চাঁদপুরেও বন্যার আশঙ্কা, চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি

চাঁদপুরে মেঘনা,পদ্মা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে চাঁদপুরে বিভিন্ন স্থানের নদীসিকিস্তি (নদীতে জমি ভেঙে যাওয়া) এলাকা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। অনেক উচুস্থানেও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে করে চাঁদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ড মনে করছে চাঁদপুরেও বন্যার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়ছে মেঘনার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলাঞ্চলও ব্যাপকভাবে নদী এলাকায় ভাঙনও দেখা দিয়ে অব্যাহতভাবে চলছে।
দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যঞ্চলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চাঁদপুরেও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এমনটাই আভাস দিয়েছেন চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আক্তার।
ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চাঁদপুর বেষ্টিত পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনার পানি চাঁদপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। বুধবার বিকালে জোয়ারে মেঘনার পানির পরিমাণ ৪ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়।
ওই সময় চরাঞ্চলসহ নদীর দুই পাড়ের নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। মঙ্গল ও বুধবার দুই দিনের জোয়ারে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরিঘাটের পন্টুন সংযুক্ত গ্যাংওয়ে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরিতে যানবাহন উঠানামায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
গত দুই দিনের জোয়ারে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে মেঘনার চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে নদী ভাঙনও।
হাইমচরের সাহেবগঞ্জ, মিয়ার বাজার, চরভৈরবী, ঈশানবালা মাঝেরচর, তেলির মোড়, চাঁদপুর সদরের, হানারচর গোবিন্দিয়া, ইব্রাহিমপুর, রাজরাজেশ্বরের ইউনিয়নে ভাঙন অব্যাহতভাবে চলছে।
এদিকে পদ্মা মেঘনার মিলনস্থল শহরের মোলহেডে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করায় বড় এই দুই নদীর বিশাল পানির চাপে হুমকির মুখে রয়েছে চাঁদপুর শহর রক্ষা প্রধান বাঁধ এলাকা।
ভাঙন কবলিত ও পানিবন্দি লোকজন তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আখতার আরো জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাঁদপুরে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। তবে এখানকার পানি দাঁড়িয়ে থাকে না। জোয়ার বৃদ্ধি পেলে, ভাটায় কমে যাচ্ছে। বুধবার পানি ডেঞ্জার লেভেলের পরিমাণ ছিল ৫৫ সেন্টিমিটার।
চাঁদপুরের দুটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই তিনটি বাঁধের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে ব্যাপকভাবে।
চাঁদপুর শহর রক্ষা বাঁধের ভাঙন দেখা দিলে তা মোকাবেলার জন্য প্রায় তিন হাজার বালুভর্তি জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যা তাৎক্ষণিক ফেলে মোকাবেলা করা হবে বলে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/কেএম)

মন্তব্য করুন