বাকিতে মুদিসামগ্রী দিচ্ছে ‘বাজার নাও’

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট ২০২০, ১৭:০১| আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২০, ১৭:৪০
অ- অ+

চাকরির বেতন নির্ভর মধ্যবিত্তরা মাসের বেতন পেতে বিলম্ব হলে নানা ভোগান্তির শিকার হন। হাতে টাকা না থাকলে স্থানীয় মুদি দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কিনতে হয়। আর সে বাকির টাকা সময় মতো পরিশোধ করতে না পারলে হতে হয় অপমানিত, অপদস্ত। এসব ভোগান্তির ইতি টানতে ই-কমার্সের মাধ্যমে বাকিতে মুদি সামগ্রী সরবরাহ করছে ‘বাজার নাও’। সাধারণ ই-কমার্স বাজারের মতো হলেও ‘বাজার নাও’ সুপরিচিত তাদের এ ভিন্ন ধর্মী উদ্যোগের কারণে।

‘বাজার নাও’ এর প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক অনুসা চৌধুরী ঢাকা টাইমসকে জানান, মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই ‘বাজার নাও’ এর সৃষ্টি।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না শুধু বেতনের নির্ভশীলতার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদার ক্ষেত্রে তাদের জীবন সীমাবদ্ধতায় কাটুক। তাদের সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই বাজার নাও তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দিচ্ছে অগ্রিম ভাবে, সরবরাহ পাওয়ার পরে জিনিসপত্রের দাম পরিশোধ করতে পারে ২০ দিন পরেও।‘

অনুসা বলেন, ‘বাজার নাও একটি অনলাইন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। যেটা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ করে থাকে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে এটার নতুনত্ব কি? বাংলাদেশে এত হাজার হাজার ওয়েবসাইট এবং পেজ এই ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ করেই ব্যবসা করছে, তাহলে বাজার নাও এর বিশেষত্ব টা কোথায়? বাজার নাও বাংলাদেশের প্রথম ই-কমার্স গ্রোসারি সার্ভিস, যেটা আসলে বাকিতে পণ্য সরবরাহ করে তাদের ভোক্তাদের।‘

এমন ভিন্ন ভাবনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নতুন বাস্তবতা, নতুন স্বাভাবিকতা, এই পেনডেমিক আমাদের জীবনের যা কিছু নতুন উপলব্ধি শিখিয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের গুরুত্ব। আমি আগে কখনোই চিন্তা করিনি আমার বাসায় লবণ থেকে চাল পর্যন্ত কিভাবে আসে। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারি যে একটি সংসারের গ্রোসারির সরবরাহ কতটা কঠিন হতে পারে।‘

‘পরিসংখ্যান বলছে ৬১ মিলিয়ন বাংলাদেশি নাগরিক চাকরিজীবী। যদিও বেশির ভাগ কোম্পানি দাবি করে তাদের কর্মকর্তাদের তারা স্যালারি দেয় মাসের ৫ তারিখের মধ্যে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিভিন্ন কারণে এটা সম্ভব হয় না। অনেক সময় এটা ১০ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ কিছু কিছু সময় ২০ তারিখ পর্যন্ত হয়ে যায়। কিন্তু সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কি বেতনের দিনটাকে বোঝে? তাহলে এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? কীভাবে আমরা টাকা ছাড়াই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারি? অনেক সময় বেশিরভাগ মানুষই তাদের কাছের মুদি দোকান থেকে বাকি নেয় কিন্তু একটা মুদি দোকানে সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকে না। একটি সুপারস্টোর থেকে যত ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করা যায় মুদি দোকানে তা সম্ভব হয় না। কাজেই তাদের আসলে নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। বাজার নাও এই সমস্যার একটি চমৎকার সমাধান নিয়ে এসেছে।‘

বর্তমানে শুধু রাজধানীতে প্রতিষ্ঠানটির এ সেবা কার্যক্রম চালু আছে। ভবিষ্যতে সারাদেশে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে তরুণ এ নারী উদ্যোক্তা বলেন, ‘বর্তমানে বাজার নাও মিলিতভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বড় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এ সেবাকে আরও প্রসারিত করার জন্য সিটি গ্রুপ, এসিআইসহ অনেকের সঙ্গে এবং সামনে আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে ‘বাজার নাও’। এর মূল লক্ষ্য সকল কোয়ালিটি পণ্যের বিশাল ভান্ডার তৈরি করে এই সেবাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। তবে বর্তমানে বাজার নাও শুধুমাত্র ঢাকা শহরে সেবা দিলেও ভবিষ্যতে এর কার্যক্রম পুরো দেশব্যাপী করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে দ্রুত।‘

প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জানিয়ে আনুসা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আমাদের ভোক্তা, সেবা গ্রহীতা এবং শুভাকাঙ্খীদের ভালোবাসা ও সহযোগিতাই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। সেবাই মূল লক্ষ্য নিয়ে আমরা সেইসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই যারা তাদের পরিবারে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঠিক সময়ে ক্রয় নিয়ে চিন্তিত, যারা বিভিন্ন ভাবে বাকির ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার, যারা ক্রেডিট কার্ড সার্ভিসের বাইরে এবং উপার্জনের টাকায় সঠিক সময়ে পণ্য ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছেন, তারা যেন বাকিতে, সঠিক মূল্য, সঠিক সময়ে, সঠিক পণ্য ক্রয়ের সেবাটি স্বাচ্ছন্দে গ্রহণ করতে পারেন সেই উদ্দ্যেশ্যে ‘বাজার নাও’ কাজ করছে।‘

(ঢাকাটাইমস/২৮আগস্ট/কারই/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ডেমরায় গণধর্ষণ মামলার আসামি মিঠুন গ্রেপ্তার
মবের জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
চট্টগ্রামের রাউজানে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা
‘সংস্কার কমিশনের আগে সংস্কার জরুরি’
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা