‘শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন মত গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী হাতিয়ার’

রাফিউজ্জামান লাবীব, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২১, ১৯:৪৫| আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২১, ২০:০২
অ- অ+

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ। অনলাইনে পাঠদান ও পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা আছে। নানা ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ট্রল করা, সমালোচনাও চলছে। ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে কি-না, তা নিয়েও তর্কবিতর্ক কম নয়।

অনলাইনে পড়াশুনা কতোটা ফলপ্রসূ হচ্ছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সবার টিকা গ্রহণ সম্পন্ন হলে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কি-না, সরাসরি পাঠদান করতে না পারার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কী পদক্ষেপ, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান

ঢাকা টাইমস: দেড় বছর হতে চলল ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সরাসরি পাঠদানসহ শিক্ষাদানে সামগ্রিক যে ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব কি-না?

মো. আখতারুজ্জামান: আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সরাসরি পাঠদান পক্রিয়া ব্যহত হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা এবং অপূর্ণতা তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলো বিবেচনায় এনে আমরা একটি শিক্ষার্থীবান্ধব পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। যার ফলে সামগ্রিক ক্ষতি কিছুটা হলেও, আমার মনে হয় পুষিয়ে উঠা সম্ভব।

ঢাকা টাইমস: সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকাদান সম্পন্ন হলে পুরোদমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি-না?

মো. আখতারুজ্জামান: এই বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নেব না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার টিকা নিশ্চিত হলে সরকারিভাবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটাই আমরা বাস্তবায়ন করব।

ঢাকা টাইমস: অনলাইনে পাঠদান ও পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে, বাস্তবতার নিরিখে অনলাইন পাঠদানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতোটা ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে পেরেছে?

মো. আখতারুজ্জামান: মিশ্র প্রতিক্রিয়া গণতন্ত্রের জন্য খুবই শক্তিশালী একটি হাতিয়ার। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের চর্চা হয় তাই এখানে সবারই মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। গণতন্ত্র গঠনে ভিন্নমত থাকা ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করে। এটা খারাপ কোনো দিক নয়।

আর অনলাইনে পাঠদানের বিষয়টির ব্যাপারে বলতে চাই, আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে যেহেতু কঠিন একটি পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি তাই অনলাইনই একমাত্র পাঠদানের মাধ্যম হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। আমরা স্থবির না থেকে অনলাইনকে নির্ভর করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

এখন অনেকের সমস্যা তো থাকবেই। এটাকে অস্বীকার করা যাবে না। তবে এই সমস্যাগুলোর অজুহাত দিয়ে আমরা চুপচাপ বসে থাকতে পারি না। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার পরেও অনলাইনে যেভাবে ক্লাস, পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এতে করে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখা সম্ভব হচ্ছে। পড়াশুনা থেকে তারা যেন বিচ্যুত না হয় সেজন্য আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এটার মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক ফলাফল প্রত্যাশা করি।

ঢাকা টাইমস: করোনাসৃষ্ট পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করা যায়। কোনও কোনও শিক্ষার্থী যেমন শিক্ষকদের নিয়ে যা খুশি বলছেন আবার কতিপয় শিক্ষকও নানা ইস্যুতে সমালোচিত হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং একজন শিক্ষাবিদ হিসেবে এই বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?

মো. আখতারুজ্জামান: করোনার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বিষয়টির সঙ্গে আমি একমত হতে পারলাম না। বরং করোনার কারণে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে যোগাযোগ আগের তুলনায় অনেক বেশি দৃঢ় হয়েছে। এখন যখনই কোনো বিষয়ে শিক্ষকের সহায়তা প্রয়োজন তখনই অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকদের পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমি এটা মেনে নিচ্ছি যে স্বশরীরে যোগাযোগ ক্ষীণ হয়ে গেছে। বাস্তবতা হলো করোনার কারণে এটা তো সম্ভবও না। বর্তমানে নতুন মাত্রার প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগ বেড়েছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক বলে আমি মনে করি। যোগাযোগ স্বশরীরে বা অনলাইনে যে কোনও মাধ্যমেই হোক না কেন, যোগাযোগ রাখতে হবে।

শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করছে এটা খারাপ কোনও বিষয় না। আগেও বলেছি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এটা খারাপ কোনো দিক না। তবে সমালোচনা হতে হবে গঠনমূলক। গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে ভুলগুলো সংশোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/০১আগস্ট/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচনের আগেই ফ্যাসিস্টদের বিচার হবে : আইন উপদেষ্টা
ফিরে দেখা ৮ জুলাই: ‘বাংলা ব্লকেড’ শেষে সরকারকে আল্টিমেটাম, সমন্বয়ক কমিটি গঠন
নির্বাচিত হলে স্থানীয় সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আমিনুল হকের
মিলন-জাদুর ঝলক কি দেখা যাবে আবার?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা